স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ৪৪ শতাংশ রাস্তায় কোনো ফুটপাত নেই। আর যে সকল স্থানে ফুটপাত আছে তার ৮২ ভাগই চলাচলের অনুপযোগী। ফলে হাঁটতে গিয়ে নানা রকম বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের। বেসরকারী সংস্থা ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, গাজীপুর, পুরাতন ঢাকাসহ ৬টি এলাকায় পরিচালিত গবেষণার ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বিলিয়া সেন্টারে এক মতবিনিময় সভায় প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। নগরে নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে হেঁটে যাতায়াতের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় শীর্ষক ওই সভায় প্রতিবেদন উত্থাপন করেন ডবিøউবিবি’র প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নগরীতে অধিকাংশ মানুষ হেঁটে যাতায়াত করলেও নগর পরিকল্পনায় হাঁটাকে প্রাধান্য না দিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ফলশ্রæতিতে ঢাকা শহর আজ যানজটের শহরে রুপ নিয়েছে। একইসঙ্গে শহরে জ্বালানী দূষণ ও দূর্ঘটনা বাড়ছে।
জনমত জরিপের উদ্ধৃৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, নগরে চলাচলকারী প্রায় ৭৯ শতাংশ মানুষ যানবাহনের গতিকে বিপদজনক মনে করেন। তারা পথচারীর নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে হাঁটার পরিবেশ তৈরিতে ফুটপাতকে প্রাধান্য দিয়ে রাস্তা নির্মাণ, ফুটপাত থেকে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর, রাতের বেলায় বাতির ব্যবস্থা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও টয়লেট ব্যবস্থা করার কথা বলেন।
আরও বলা হয়, যাতায়াতের মূল উদ্দেশ্য গাড়ি নয়, মানুষ ও মালামাল একস্থান হতে অন্যস্থানে পরিবহন করা। কিন্তু পরিকল্পনায় গাড়িকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আমরা শহরকে অনিরাপদ কওে ফেলেছি। ক্র্যাচ, সাদা ছড়ি ও হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী ব্যক্তিও যে পথচারী পরিকল্পনায় সেটা উপেক্ষিত হচ্ছে। তাই পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করা জরুরী।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রাণভরে হাঁটার জন্য ফুটপাতকে দখলমুক্ত করতে হবে। যানজটমুক্ত শহর গড়ে তুলতেও ফুটপাতকে হাঁটা-চলার উপযোগী করা প্রয়োজন। বর্তমানে ফুটপাতগুলো জনগণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহার উপযোগী নয়।
তারা আরো বলেন, আমাদের ফুটপাতমুক্ত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। নগর পরিকল্পনায় গণ মানুষের চাহিদাকে বিবেচনা করতে হবে। সবার সহযোগিতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় পথচারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।
সংগঠনের পরিচালক গাউস পিয়ারী মুক্তির সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন সাংবাদিক নিখিল ভদ্র, শাহজাহান মোল্লা, রতন বালো, সাকিলা রুমা, রাজু হামিদ, মিজানুর রহমান, খাদিমুল ইসলাম প্রমূখ। সঞ্চালনা করেন ডবিøউবিবি ট্রাস্টের সহকারি এডভোকেসি কর্মকর্তা নাঈমা আকতার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন