বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বরিশাল নগর ভবনের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা

১৮ মার্চ থেকে জরুরী পরিসেবাও বন্ধের হুমকি

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৮, ৫:৫৩ পিএম

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী নগর ভবনের সব শাখায় তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় গতকাল থেকে বরিশাল মহানগরীতে জনগণের সাধারণ সেবাসমূহ যথেষ্ট অচলাবস্থার মুখে পরেছে। আগামী ১৮মার্চ থেকে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা সহ নগরীর  সব ধরনের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে সিটি করপোরেশনের আন্দোলনরত কর্মচারীগন। বকেয়া বেতনÑভাতা পরিশোধ ও ভবিষ্যৎ তহবিলের অর্থ ব্যাংক হিসেব জমা দেয়ার দাবীতে গত ১৮ফেব্রুয়ারী থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারীগন আন্দোলন করছে। গত ২৫ফেব্রুয়ারী থেকে ৫ঘন্টার কর্মবিরতিও পালন করছে কর্মচারীগন। গতকাল থেকে অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে লাগাতর কর্মবিরতি শুরু করল কর্মচারীগন।
এ আন্দোলন নিয়ে ইতোমধ্যে কয়েক দফা সমঝোতা বৈঠক হলেও চূড়ান্ত কোন ফয়সালা হয়নি। ফলে পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোলাটে হচ্ছে। সিটি মেয়র আহসান হাবীব কামাল বিষয়টি নিয়ে নগরীর সুশীল সমাজের সাথে বৈঠক করেছেন। তিনি জেলা প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবার অনুরোধ দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার নগরীর বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে সুশীল সমাজের সাথে মেয়রের বৈঠক চলাকালে তার বাইরে কালো পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ করে আন্দোলনরত কর্মচারীগন। তবে ঐ বৈঠক থেকেও আন্দোলনের পরিবর্তে কাজে ফিরতে আহবান জানান হয় নগর পরিষদের তরফ থেকে।
কিন্তু গতকাল সকালেই আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের প্রতিটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে। আজকালের মধ্যে আন্দোলনকারীদের সাথে জেলা প্রশাসন কথা বলতে পারে বলেও আভাস পাওয়া গেছে। অপরদিকে সাবেক চীফ হইপ এবং জাতীয় সংসদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ-এমপি আজ বরিশালের আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনিও বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের কিছুটা আভাস পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে আগামী রবিবারের মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশনের অচলাবস্থা নিরসনের একাধিক উদ্যোগ গ্রহণের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ওয়াকিবহাল মহল।
তবে নির্বাচনের বছরে আদায় কার্যক্রম বন্ধ রেখে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের এ আন্দোলনকে কিছুটা সন্দেহের চোখে দেখছেন মহলটি। বিধি অনুযায়ী আগামী জুনের মধ্যেই বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে শেষ সময়ে বর্তমান মেয়র ও নগর পরিষদকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে বিদায় করতে সচেষ্ট রয়েছে একটি মহল। আর সে লক্ষ্যেই দাবী পূরণের সব ধরনের আশ্বাস দেয়ার পরেও কর্মবিরতি সহ আন্দোলন চালিয়ে যাবার যৌক্তিকতা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করছেন নগরবাসী। অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকও বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতে শুরু করেছেন।  বিশেষকরে গত ১১মার্চ আন্দোলনকারীদের সাথে চূড়ান্ত ফয়সালার পরেও কাজে ফিরে না আশার ঘটনাটি সন্দেহের সৃষ্টি করেছে সচেতন মহলে। ২০১৩-এর অক্টোবরে প্রায় ১৫৪কোটি টাকার দায়দেনা নিয়ে বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামাল দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তখন কর্মচারীদের বেতন বকেয়া ছিল ৩মাস।
গতবছরও বকেয়ার বেতন-ভাতার দাবীতে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারীগন টানা ৭দিন আন্দোলন সংগ্রাম করে। এমনকি সে সময় পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা সহ পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে গোটা নগরী আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন