মলদ্বার বৃহদান্ত্রের একটি অংশ। মুখগহ্বরের পরেই থাকে ইসোফেগাস বা অন্ননালী। তার পর থাকে পাকস্থলী। পাকস্থলী শেষ হলে শুরু হয় ক্ষুদ্রান্ত্র। ক্ষুদ্রান্ত্রের ৩টি অংশ। ডিউডেনাম, জেজুনাম এবং ইলিয়াম। এর পরের অংশ বৃহদান্ত্র যার শেষ অংশ মলদ্বার। মলদ্বারে বিভিন্ন অসুখ হয়। ক্যান্সার তার মধ্যে অন্যতম। বৃহদান্ত্রে যত ক্যান্সার হয় তার ১-২ ভাগ হয় মলদ্বারে। আমেরিকায় ২০১৫ সালে প্রায় ১০০০ হাজার মানুষ মলদ্বারের ক্যান্সারে মারা গেছে। সাত হাজারের ওপর কেস ডায়াগনসিস হয়েছে।
মলদ্বারে ক্যান্সারের সব কারণ কিন্তু এখনো বের করা সম্ভব হয়নি। কিছু বিষয়ের সাথে এর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গিয়েছে। এসবের মধ্যে আছে-
১। দীর্ঘদিন পাইলস থাকলে। ২। মলদ্বারে সাইনাস বা ফিস্টুলা থাকলে। ৩। লিউকোপ্লাকিয়া। ৪। মলদ্বারে সঙ্গম। ৫। কনডাইলোমা একুমিনাটা।
মেয়েদের মলদ্বারে ক্যান্সার বেশী হয়। সমকামী পুরুষের মধ্যে মলদ্বার ক্যান্সার বেশী দেখা যায়। মলদ্বারে ক্যান্সার হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যায়। মলদ্বারে ব্যথা হয়। মলদ্বারের আশেপাশের জায়গা ফুলে উঠে।
অভিজ্ঞ চিকিৎসক ইতিহাস নিয়ে এবং মালদ্বার পরীক্ষা করেই ক্যান্সার বুঝতে পারেন। নিশ্চিত হবার জন্য বায়োপসি করা হয়। ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা দেখার জন্য সিটি স্ক্যান, এম আর আই এবং পজিট্রন ইমিশন টমোগ্রাফি স্ক্যান করা হয়।
মলদ্বারে ক্যান্সারের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপী ও কেমোথেরাপী দেয়া হয়। কোমোথেরাপীতে মিটোমাইসিন ও ৫ ফ্লুরোইউরাসিল ব্যবহার করা হয়। যদি ৩ সিমি এর কম আকার হয় তবে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই ক্যান্সার পুরোপুরি ভাল হয়ে যায়। পরে আবার হতে পারে। ভাল হয়ে যাবার পর যদি আবার হয় অথবা বড় সাইজের ক্যান্সার হয় তবে অপরেশন লাগে।
আমাদের দেশেও মলদ্বারে ক্যান্সারের রোগী পাওয়া যায়। এই ক্যান্সারের সাথে ধূমপান, ভাইরাস (ঐওঠ) এবং মলদ্বারে সঙ্গমের সম্পর্ক আছে। ধূমপান বর্জন করতেই হবে। অস্বভাবিক যৌনাচার কোনভাবেই করা যাবেনা। ধর্মেও কঠোর ভাবে এই আচরণের বিরুদ্ধে বলা আছে।
-ডা. ফজলুল কবীর পাভেল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন