স্টাফ রিপোর্টার : দেশের মানুষের প্রধান পেশা কৃষিকাজ। কৃষিনির্ভরশীল এই দেশে কৃষিকাজজনিত ইনজুরি কর্নিয়া ক্ষতের অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে অন্ধত্বের হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, যার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ কর্নিয়াজনিত অন্ধত্বের শিকার। দেশে কর্নিয়াজনিত অন্ধের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ, যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। একই সঙ্গে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার ব্যক্তি নতুন করে কর্নিয়াজনিত অন্ধত্বের শিকার হচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে গত বুধবার আন্তর্জাতিক চক্ষু ব্যাংক ও কর্নিয়া প্রতিস্থাপন শীর্ষক এক সিম্পোজিয়ামে বক্তারা এসব কথা বলেন। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ও রোটারী ক্লাব, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ আই এ্যান্ড টিসু ব্যাংকস (আইএফইটিবি), টিস্যু ব্যাংকস ইন্টারন্যাশনাল (টিবিআই)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অফথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ-এর সভাপতি ও বিএসএমএমইউ’র প্রো-ভিসি (প্রশাসন) ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, রোটারি জেলা ৩২৮১এর গর্ভনর এসএএম শওকত হোসেন, সাবেক রোটারী জেলা গভর্নর জয়নুল আবেদীন। সভাপতিত্ব করেন সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. আলী আসগর মোড়ল। অতিথি হিসেবে ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ আই এ্যান্ড টিস্যু ব্যাংক-এর সভাপতি মাহমুদ ফারাজদাগি, টিস্যু ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল-এর সিইও জনাব ডগলাস জে ফুরলং. স্বাগত বক্তব্য রাখেন সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ডা. একেএম সালেক।
ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, এ ধরনের সিম্পোজিয়াম মানুষের সুস্থ ও সুন্দর জীবন রক্ষায়, অন্ধত্বমোচনে এবং অন্ধত্ব প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ও রোটারী ক্লাব, আইএফইটিবি ও টিবিআই-এর সহযোগিতায় কর্নিয়াজনিত অন্ধত্ব বিমোচন জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আগামী ২ বছর মেয়াদি এই কর্মসূচির আওতায় ৬ হাজার কর্নিয়া প্রতিস্থাপন, ৮শ’ মেডিক্যাল ছাত্রছাত্রী, তরুণ চিকিৎসক, রোটারিয়ান, সেচ্ছাসেবকদের কর্নিয়া সংগ্রহের প্রশিক্ষণসহ কর্নিয়া সার্জনদের কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সিম্পোজিয়ামে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ আই এ্যান্ড টিস্যু ব্যাংক ও টিস্যু ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল-এর কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবীদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
সিম্পোজিয়ামে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২৫০ জন অন্ধের চোখে আলো ফিরিয়ে দিয়েছে সন্ধানী। ২০১৫ সালে ৫০ জন অন্ধ ব্যক্তির চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে চোখে আলো ফিরিয়ে দিয়েছে। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি’র মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৪০ হাজার ব্যক্তি মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকার করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন