স্টাফ রিপোর্টার : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও সুপেয় পানির অভাবে বাংলাদেশে বদলে যাচ্ছে পানিবাহিত রোগের ধরন। হেপাটাইটিস বি, কিডনি রোগ এবং ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সামনে গ্রীষ্মকাল শুরু হচ্ছে। এই সময়ে পানিবাহিত রোগের প্রকোপও বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষিত পানি ব্যবহারের কারণেই মূলত ডাইরিয়া, অ্যাজমা, রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
আইসিডিডিআরবি’র গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন দূষিত পানি পান করায় মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে ফেলছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা দিতে না পারলে এমন স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।
দেশের মানুষের দৈনিক সুপেয় পানির যে চাহিদা, ভূগর্ভ থেকে তার পুরাটা মেটানো সম্ভব হয় না। নির্ভর করতে হয় ভূ-উপরিভাগের পানির উপর। যদিও ভূ-উপরিভাগের বেশির ভাগ পানিই মানুষের ব্যবহারযোগ্য নয়। গ্রামের মানুষ বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে নদী, পুকুর, খাল-বিলের পানি। বিভিন্নভাবে দূষিত হচ্ছে এসব উৎসের পানি। খাওয়া কিংবা ব্যবহার, দুইভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ এসব পানি।
রাজধানীর মানুষের দৈনিক ২২০ থেকে ২৩০ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন। যার পুরোটারই যোগান দেওয়া হয় শীতলক্ষা, বুড়িগঙ্গাসহ বিভিন্ন নদীর পানি শোধন করে। এসব নদীর দূষণ এমন পর্যায়ে গেছে যে পুরোপুরি শোধন করা সম্ভব হয় না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, পেটের পীড়া হলে শরীরে যা খাচ্ছি তা কাজে লাগছে না, শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্রেইন, কিডনি, হার্ট সব কিছুতেই সমস্যা হচ্ছে। যদি বাচ্চারা খায় তাহলে তাদের গ্রোথ বা বৃদ্ধি যথাযথ হচ্ছে না, হাবাগোবা বাচ্চা হচ্ছে। যদি গর্ভাবস্থায় কোনো মা এ পানি পান করে তবে মা ও শিশুর সমস্যা হচ্ছে।
আইসিডিডিআরবি’র গবেষক ডা. প্রদিপ কে বর্ধণ বলেন, হেপাটাইসিস এ ভাইরাস থেকে জন্ডিস হতে পারে, কৃমি বাড়তে পারে, চর্মরোগ হতে পারে। এগুলো সবই কিন্তু দূষিত পানি ব্যবহারে বাড়তে পারে। যেখান থেকে পানির ব্যবহার আমরা করতে চাই না, বা যে সোর্সটা আমরা পানির জন্যে বাদ দিতে চাই এখন বাধ্য হচ্ছি সেখান থেকে পানি নিতে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন