অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত ৫০ শতাংশ রাখা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি। রোববার (০১ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি’র সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাদের অনেক দাবি ছিল। এসব দাবি-দাওয়া নিয়ে আজকে অনেক বিস্তর আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে তাদের কিছু টাকা নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর) করতে হয়।
মুহিত বলেন, এটা বর্তমানে সাড়ে ৬ শতাংশ আছে। এটা এখন ওনারা দাবি করেছেন- ৩ শতাংশ কমিয়ে দেয়ার। আমরা সবকিছু বিবেচনা করে, সকলের সঙ্গে আলোচনা এবং বিভিন্ন মহলের উপদেশ শুনে সিআরআর ১ শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, তবে এটা ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে। আবার রিভিউও করবো জুন মাসে। এ সময়ের মধ্যে দেখবো কী হয়। এই জুন মাসের আইডিয়াটা সালমান দিয়েছে (সালমান এফ রহমান)। যদি দেখি এটা ইফেক্টিভ (কার্যকর) হচ্ছে ফাইন (ভালো)। যদি দেখি আরো কিছু করতে হয়... দেন (তখন) করবো।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত ৫০ শতাংশ রাখা হবে। আমার অফিস থেকে (অর্থ মন্ত্রণালয়) ইতোমধ্যে এটা ইস্যু হয়েছে গেছে।
এত পরিমাণ টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে দেয়া হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘কোনো কিছু হয়নি যার জন্য এই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ইম্পসিবল (অসম্ভব), বাড়বেই না এই বছর।’
এসময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন- তাহলে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আসছে এটা আমরা আশা করতে পারি? জবাবে মুহিত বলেন, ‘হ্যাঁ, আশা করা যায়।’
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা ও আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এইচবিএম ইকবালসহ আর্থিক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে ঝুঁকি মোকাবিলায় মোট তহবিলের সাড়ে ৬ শতাংশ সিআরআর হিসেবে জমা রাখে। নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ব্যাংকগুলো ওই সিআরআর থেকে ১ শতাংশ ব্যবহার করতে পারবে। এতে প্রতি ব্যাংক ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে।
এছাড়া সরকারি ব্যাংকগুলোতে এতদিন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত ৭৫ শতাংশ রাখা হত। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে এ আমানত রাখা হত ২৫ শতাংশ। নতুন এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে ৫০ শতাংশ করে আমানত রাখা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন