শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া সুস্পষ্ট শিরক আইনি বাধ্যতাও নেই -ইসলাম ও দেশরক্ষা কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৮, ৬:২৩ পিএম

ইসলাম ও দেশরক্ষা কমিটির আহবায়ক নাসিমুর রহমান রেজভী এবং সদস্য সচিব মাওলানা আমিরুল ইসলাম কাসেমী এক বিবৃতিতে বলেছেন “মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়ার আইনি নির্দেশ নেই।” এটা মাদরাসা শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেয়া আইনি দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অবৈধ এবং ইসলামের দৃষ্টিতে গর্হিত অন্যায়।

জাতীয় সংগীত অধ্যাদেশ ১৯৭৮ এর ৫ম অনুচ্ছেদের ২য় উপধারায় রয়েছে- “সকল স্কুল সমূহে, কার্যদিবস শুরু হবে জাতীয় সংগীত পাঠের মাধ্যমে।” আবার স্কুলের ব্যাখ্যায় এনসিটিবি অধ্যাদেশ: ১৯৮৩ এর অধ্যাদেশ নং ৫৭ এর ২(ই) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, “স্কুল বলতে মাদ্রাসা ছাড়া যেকোনো প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যা দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাক্রম অন্তর্ভুক্ত করে। এসব জাতীয় প্রতিষ্ঠান কোন আইন বা কর্তৃপক্ষ দ্বারা স্বীকৃত হোক অথবা না হোক।”

আর মাদ্রাসার বৈশিষ্ট্য বলতে- “মাদ্রাসা শিক্ষা অধ্যাদেশ ১৯৭৮ এর ২ এর (এ) এর ধারায় বলা হয়েছে, “মাদ্রাসা ” বলতে একটি ইসলাম ধর্ম বিষয়ক শিক্ষা অর্জনের প্রথাগত একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যার অন্তর্ভুক্ত ফুরকানিয়া মাদ্রাসা, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, দাখিল মাদ্রাসা, আলিম মাদ্রাসা।”

আইনে সুস্পষ্টভাবে স্কুলের কথা বলা হয়েছে, মাদরাসার কথা নয়। এমনকি কলেজ, ইউনিভার্সিটির কথাও বলা নেই। সেখানে কলেজ, ইউনিভার্সিটিকে বাধ্য না করে মাদরাসায় জাতীয় সংগীত পাঠে বাধ্য করা গভীর ষড়যন্ত্রমূলক।

এছাড়া সংবিধান এর ৪১ ধারায় বলা আছে, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কোন ব্যাক্তির নিজস্ব ধর্ম সংক্রান্ত না হইলে তাহাকে কোন ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ কিংবা কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপাসনায় অংশগ্রহণ বা যোগদান করিতে হইবে না। অর্থাৎ ধর্মীয় চিন্তার বা আক্বিদার সাথে সামঞ্জস্য না হলে অংশগ্রহণ করা লাগবে না।

 

বিবৃতিতে তারা বলেন, হামদ-নাত ও ক্বাছীদা শরীফ ছাড়া দ্বীন ইসলামে যেকোনো ধরনের সংগীত নিষিদ্ধ। ধাতু প্রত্যয় অনুযায়ী, সম পূর্বক গৈ ধাতু যোগে সঙ্গীত নিষ্পন্ন। গৈ ধাতুর অর্থ গান করা। সংগীত এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ গান অন্য কথায় গীত। ব্রহ্মা, ভরত ,কল্লিনাথ, হনুমান-এ চারজনকে সংগীতের শাস্ত্রকার বলা হয়। ভারত উপমহাদেশে সংগীতের উৎপত্তি হয়েছে হিন্দু ও বৌদ্ধদের থেকে। কেননা, বাংলা ভাষা ও সঙ্গীতের উৎস প্রাচীন চর্যাপদ। যা ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে এর পুথি আবিষ্কার করে। এটি মূলত প্রাপ্ত ৪৭টি গানের সংকলন। খ্রিস্টীয় নবম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে গানগুলি রচিত। চর্যাগীতিগুলি মুখ্যত বৌদ্ধ সহজিয়াদের সাধনপদ্ধতিমূলক গান। চর্যার পরে বাংলা সঙ্গীতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নাথগীতি। নাথগীতি প্রধানত দুটি ধারায় বিকশিত হয়েছে। একটি ধারায় গোরক্ষনাথ ও তাঁর গুরু মীননাথের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া বাংলা সঙ্গীতকলার আরেকটি নিদর্শন বড়– চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। (বাংলাপিডিয়া)

সুতরাং মুসলমানদের সাথে সংগীতের কোন সম্পর্ক নেই। তা জাতীয় সংগীত হোক আর আন্তর্জাতিক সংগীত হোক।

ইসলামে সংগীত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ এ সুরা লুকমান, আয়াত-৬ এ বলা হয়েছে, গান গাওয়া সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়িজ। (সমূহ তাফসীর) আর হাদিস শরীফে বলা হয়েছে প্রচলিত গান গাওয়া অন্তরে মুনাফিকি বা খারাপ চিন্তা তৈরি করে ।

এছাড়া বর্তমান জাতীয় সঙ্গীতের আরো কয়েকটি সমস্যা এই যে, এটি বঙ্গভঙ্গ রদের জন্য লিখিত। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী। কারণ রবীন্দ্রনাথ “আমার সোনার বাংলা” গানটি লিখেছিল ১৯০৫ সালের ‘বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন’ রদ করার জন্য। তৎকালীন পূর্ব ভঙ্গ বা বর্তমান বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে। (উইকিপিডিয়া)

এছাড়া গানে হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণাধীন বঙ্গকে ‘সোনার বাংলা’ আখ্যা দেয়া হয়েছে। সেই বাংলাকে হিন্দুদের দেবীর ন্যায় ‘মা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। কারণ হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, দুর্গা, কালি, লক্ষ্মী সহ বিভিন্ন দেবীকে মা বলা হয়, আবার ‘পৃথিবী, স্বদেশ এবং মাটিকে ‘মা’ বা মাতৃরূপী দেবীরুপে সম্বোধন করা হয়। যেভাবে ভারতমাতা বলা হয়। সেই অর্থে রবীন্দ্রনাথ হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণাধীন বঙ্গকে মা আখ্যা দিয়ে পূর্ব বঙ্গ গঠনের বিরোধিতা করেছে। এ গানটি পুরোপুরি হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সংযুক্ত। যা সম্পূর্ণ শিরক। তাই মাদরাসায় এ সঙ্গীত কখনই চালু করা যাবে না। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আম্মাজানের রচিত নাত শরীফকে জাতীয় নাত শরীফ হিসেবে চালু করতে হবে।

সুতরাং মাদরাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া বা প্রতিযোগিতা বাধ্যতামূলক করা হবে দ্বীন ইসলাম বিরোধী এবং সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশ সমূহের বিরোধী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Add
ওবাইদুল ৩ এপ্রিল, ২০১৮, ৮:১৯ পিএম says : 1
এদের শিরক সম্পর্কেও ধারনা নাই !!!
Total Reply(0)
Add
৪ এপ্রিল, ২০১৮, ১:১২ পিএম says : 0
এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন hojor the right
Total Reply(0)
Add
৪ এপ্রিল, ২০১৮, ১:১২ পিএম says : 0
এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন hojor the right
Total Reply(0)
Add
সফিকুল ইসলাম ৪ এপ্রিল, ২০১৮, ১:৫৪ পিএম says : 0
এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন এটা সম্পন্ন শিরিক
Total Reply(0)
Add
রিফাত ২০ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:১১ এএম says : 0
সবকিছু আল্লাহর। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ কি বলেছে।
Total Reply(0)
Md Rezaul Karim Nabil ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:১৯ এএম says : 0
যনাব একদম মনের কথাগুলো'ই বলেছেন। ধন্যবাদ খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়েছেন, যদি আপনি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে, জাতীয় সংগীত গাওয়ার নামে শিরক করা বন্ধ করুন। না জেনে এতদিন আমরা এই ভুলটি করে এসেছি, আল্লাহ আমাদেরকে মাফ করুক আমিন।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ