ময়মনসিংহের ভালুকা পাইওনিয়র কোম্পানীর দুই কর্মচারীকে গভীর রাতে তোলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে হাতুরি দিয়ে মারপিটের ঘটনায় বনবিভাগের ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আদালতে ২টি মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৩ নং আমলী আদালতে পৃথক পৃথকভাবে আহত সিকিউরিটি গার্ড সেলিম ও ড্রাইভার অন্তর হোসেন বাদী হয়ে এ দুটি মামলা দায়ের করেন । মামলার আসামীরা হলেন, ভালুকা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম হাবিবুল্লাহ (৪২), বন প্রহরী রুহুল আমিন (৫৫), সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান (৪৮) ও বিট অফিসার হাফিজুর রহমান (৫০)।
সিকিউরিটি র্গাড মো: সেলিম মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ৩টায় কর্মরত অবস্থায় বনবিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা হাত-পা বেধে তুলে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে চোঁখ বেঁেধ হাতুরি ও হকিস্ট্রিক দিয়ে ব্যাপক মারপিট করে।এ সময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লে আমার নাকে মুখে পানি ঢেলে জ্ঞান ফিরিয়ে আনে।
অপর বাদী অন্তর হোসেন তার অভিযোগে উল্লেখ করেন , বনবিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাকে হাত-পা বেধে তুলে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে চোঁখ বেঁেধ হাতুরি দিয়ে বাম চোখের উপর আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে এবং হকিস্ট্রিক দিয়ে পিটিয়ে ব্যাপক জখম করে। এসময় তারা পায়ের বুট দিয়ে আমার গলায় পারা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে বলে, তর মালিক বাদশারে বল এক কোটি টাকা নিয়ে আসতে, নইলে তোকে জানে মেরে ফেলবো। কিন্তু মালিককে এসব কথা না বলার কারণে তারা নির্মমভাবে মারধর করে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করে।
ভুক্তভোগী সূত্র জানায়, ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী এলাকার মেহেরাবাড়ী মৌজায় প্রায় ১১একর জমি ক্রয় করে সম্প্রতি পাইওনিয়র স্পিনিং লিমিটেডের নির্মান কাজ শুরু করেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: বাদশা মিয়া। কিন্তু বন বিভাগের ভালুকা রেঞ্জ অফিস ওই জমিটি তাদের দাবি করে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ আদালতে স্থিতি অবস্থার নির্দেশ চাইলে ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত বিবাদীকে আদালতে হাজির হয়ে বাখ্যা করার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক গত ১৫ এপ্রিল আদালতে বিবাদী মো: বাদশা মিয়া হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করলে বিজ্ঞ আদালত পূর্বের স্থিতি অবস্থার আদেশ প্রত্যাহার করেন। প্রতিষ্ঠানের মালিক মো: বাদশা মিয়া জানান, স্থিতি অবস্থা প্রত্যাহারের পরদিন গত ১৬ এপ্রিল কোম্পানীর সিকিউরিটি র্গাড মো: সেলিম(৩৯) ও ড্রাইভার অন্তর হোসেন(২৯)কে কর্মরত অবস্থায় স্থাণীয় বনবিভাগের কর্মকর্তারা ধরে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় মিথ্যা মামলায় আদালতে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়। আদালত সূত্র জানায়, গত ১৭ এপ্রিল বিজ্ঞ বিচারক গ্রেফতারকৃত আসামীদের মেডিকেল রির্পোট দেখে শারীরীক অবস্থা বিবেচনা করে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তপক্ষকে চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশ দেন। একই সাথে আসামীদের শারীরিক আঘাতের বিষয়ে আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে বনবিভাগ ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহকে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। সূত্র জানায়, গত ১৭ এপ্রিল বুধবার সকালে জামিনে মুক্ত হয়ে আহতরা প্রথমে ভালুকা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকালে তাদের অবস্থা অবনতি হলে গুরুতর আহত ২ কর্মচারীকে ভালুকা হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রেরণ করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামলা দায়ের করেন। এসব বিষয়ে ভালুকা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম হাবিবুল্লাহ বলেন, আমরা কোন মারটি করিনি। তবে গাড়ীতে উঠানোর সময় ধস্তাধস্তিতে তারা কিছুটা আহত হলে আমি তাদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন