বাংলা নাম কুল। ইংরেজি নাম : ইবৎ. বৈজ্ঞানিক নাম : তরুরঢ়যঁং সধঁৎরঃরধহধ. আমরা যারা গ্রামে কিংবা শহরে বসবাস করি সকলেই খুব ভালোভাবে বড়ই বা কুল চিনি। কুল পুষ্টিমান সমৃদ্ধ ফল এতে ভিটামিন ‘সি’ আছে। বাংলাদেশের সর্বত্র উৎপাদন হয়। তবে রাজশাহী, কুমিলা, সাতক্ষীরা, নাটোর, পাবনা, নওগাঁ, মনমনসিংহ জেলায় বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়। প্রথমেই বলে রাখা ভালো ঔষুধার্থে যেখানেই কুলের অভ্যন্তরিক ব্যবহারের কথা বলা হবে সেখানেই সুপক্ক শুষ্ক (শুকনো) কুল প্রয়োগ করার বিধি লেখা হলো- পুষ্টি তালিকা : প্রতি ১০০ গ্রাম বড়ই বা কুলে যা আছে- জলীয় অংশ ৭৩.২, ক্যালসিয়াম ১১ মিঃ, মোট খনিজ ১.০, লৌহ ০ মিঃ, আঁশ ০, ক্যারোটিন (মাইক্রোগ্রাম) ০, খাদ্যশক্তি (কিলোক্যালরি) ১০৪, ভিটামিন বি-১ ০.০২, আমিষ ২.৯, ভিটামিন ০.০৫ মিঃ, চর্বি ০.১, ভিটামিন সি ৫১, শর্করা ২৩.৮। ওষুধি ব্যবহার : * অতিসারে : শুকনো কুলের গুঁড়ো ৩/৪ চামচ একটু সাদা দৈয়ের সাথে মিশিয়ে খেলেও উপকার হয়। এটি অতি প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন গ্রন্থে কুলের উপকারিতার কথা উলেখ রয়েছে। কুলের বীজের গুঁড়োও কাজ করে। * পেটের বায়ু ও অরুচি : এই অসুবিধাটা কিছুতেই যাচ্ছে না এক্ষেত্রে শুকনো কুলের গুঁড়ো, তার সাথে একটু সৈন্ধব লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো এবং একটু চিনি মিশিয়ে চূর্ণ করে এ চূর্ণ চুষে চুষে সেবন করলে পেটের বায়ুও কমবে অরুচিও সারবে। * সাদাস্রাবে : শুকনো কুলের গুঁড়ো ও আখের গুঁড় মিশিয়ে চেটে খেলে মেয়েদের সাদাস্রাবের কিছুটা উপকার হয়। * হৃদরোগে : শুকনো কুলের গুঁড়ো সকালে ও বিকালে দুই বার ৩/৪ গ্রাম মাত্রায় পানিসহ খেলে হৃদরোগের উপকার পাওয়া যায়। * মাথার যন্ত্রণায় : খুব রৌদ্র লাগা, আগুনের তাপ লাগা, হঠাৎ জ্বর আসছে, এ রকম ক্ষেত্রে মাথায় যন্ত্রণা উপস্থিত হয়, সেখানে পাতা ও কচি ডগা বেটে প্রলেপ দিলে ওই যন্ত্রণার উপশম হবে। তবে বর্তমান যুগে এটা করার মানসিকতা অনেকেরই নেই। এছাড়াও কুল ও পাতাবাটা বাতের জন্য উপকারী। ফল রক্ত পরিষ্কার এবং হজম সহায়ক। ব্যবহার : কুল থেকে আচার ও চাটনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সবশেষে বলব, কুল আলাহ তায়ালার এক অপূর্ব দান। এর উপকারিতার শেষ নেই। সুস্থ, নীরোগ থাকতে যদি চান নিত্যদিন মৌসুমি ফল খান।
ষ ডাঃ মাও. লোকমান হেকিম
চিকিৎসক, কলামিস্ট
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন