পাবনায় অনুমতি না নিয়ে দেশের একটি বেসরকারী সংস্থা (এনজিও ) ভারতীয় হেপাটাইটস বি ভাইরাসের টিকা দিতে দিলে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন প্রশিক্ষণার্থী। পাবনা প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (পিটিআই)-এ প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের হেপাটাইটিস বি-ভাইরাসের শ্রীরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার অনুমোদনহীন টিকা দেওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েকজন। বিক্ষুব্ধরা টিকাদানকারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন গত বুধবার বিকালে। থানা পুলিশ বলছে, এই টিকা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, টিকা প্রদানে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন বৈধ অনুমোদন নেই। তারা জেলা সিভিল সার্জনের সাথেও কোন প্রকার যোগাযোগ করেননি।
গত বুধবার দুপুরের ওই এনজিওর কর্মীরা আবারো টিকা দিতে আসলে, অনুমোদন ও উপকরণ দেখতে চান প্রশিক্ষণার্থীরা। পরে সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধিরা টিকার উপকরণ পরীক্ষা করে প্রাথমিক ভাবে ভূয়া বলে মত দেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা টিকাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
পাবনা সদর থানার এসআই মোহাইমেনুল ইসলাম জানান, পাবনা পিটিআইতে ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। পটুয়াখালীর ডিজেবল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার পরিচয়দানকারী সুলতান মাহমুদ নামের এক ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছে। তার নিকট থাকা টিকা গুলি পরীক্ষা- নিরীক্ষা করার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনকে প্রদান করা হবে। পাবনার সিভিল সার্জন আজ বৃহষ্পতিবার ওই টিকার স্যাম্পল পরীক্ষার জন্য ঢাকা মহাখালী ল্যাবে প্রেরণ করেছেন বলে জানা গেছে। পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল ইসলাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভোগী একাধিক প্রশিক্ষণার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, গত কয়েক মাস ধরে পিটিআই প্রশাসনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের টিকা দিয়ে আসছিল পটুয়াখালীর ডিজেবল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা শ্রীরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া নামের একটি কোম্পানীর জেনভেগ বি নামের টিকা দেন। স¤প্রতি টিকা গ্রহণের পর একজন নারী প্রশিক্ষণার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের টিকা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়।
পাবনা পিটিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত তত্ত¡াবধায়ক সুভাস কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘মূলত সুপার ম্যাডাম এই প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষনার্থীদের হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা দেওয়ার অনুমতি প্রদান করেছেন। বিষয়টি তিনিই বিস্তারিত বলতে পারবেন।
এদিকে পাবনা সিভিল সার্জন ডা. তাহাজ্জেল হোসেন জানান, টিকা এবং যে কোন প্রকার ওষুধ জনগণের মধ্যে প্রয়োগের আগে এনজিও প্রতিষ্ঠানকে পাবনা সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। তারা এই প্রতিষ্ঠান সেটি করেনি। উল্লেখ্য, পাবনার বিভিন্ন উপজেলায় এই ধরণের বেশ কিছুসংখ্যক এনজিও দেখা যায়, তারা নানা ধরণের ওষুধ জনগণের মাঝে বিতরণ করেন। এই সব এনজিও সিভিল সার্জনের কাছ থেকে কোন অনুমতি নিয়েছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন