রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

আজ সেই ভয়াল ২৯শে এপ্রিল

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:৫৮ পিএম

আজ ভয়াল ২৯ শে এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার পুরো উপকূল। লাশের পরে লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল সর্বত্র। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল বিস্তীর্ণ অঞ্চল। দেশের মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে সেদিন প্রত্যক্ষ করেছিল প্রকৃতির করুণ এই আঘাত। স্বজন হারানোর আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠেছিল চারিদিকের পরিবেশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এতবড় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি এদেশের মানুষ এর আগে আর কখনো হয়নি। পরদিন সারা বিশ্বের মানুষ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছিলেন ধ্বংসলীলা। আর্তনাদে কেঁপে উঠেছিল বিশ্ব বিবেক।
সেদিন বাংলাদেশে আঘাত হানা ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতের সংখ্যা বিচারে পৃথিবীর ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় গুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল রাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানা এ ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়টিতে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ কিমি (১৫৫ মাইল/ঘণ্টা)। ঘূর্ণিঝড় এবং এর প্রভাবে সৃষ্ট ৬ মিটার (২০ ফুট) উঁচু জলোচ্ছ্বাসে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৪২ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এর সংখ্যা আরো বেশি। মারা যায় প্রায় ২০ লাখ গবাদিপশু। গৃহহারা হয় হাজার হাজার পরিবার। ক্ষতি হয়েছিল ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদ। প্রায় এক কোটি মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছিল।
এই ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ‘ম্যারি এন’ নামে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার পুরো উপকূল। উপকূলবাসী আজও ভুলতে পারছেনা সেই রাতের দুঃসহ স্মৃতি।
প্রলয়ঙ্করী এই ধ্বংসযজ্ঞের ২৭ বছর পার হতে চলেছে। এখনো স্বজন হারাদের আর্তনাদ থামেনি। ঘরবাড়ি হারা অনেক মানুষ এখনো মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিতে পারেনি। এই ঘূর্ণিঝড়ে পেকুয়া ও কুতুবদিয়া, মহেশখালী এবং বাশখালী, আনোয়ারা, পতেঙ্গা, সীতাকুণ্ড, হাতিয়া, সন্দীপসহ পুরো উপকূল জুড়েই মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এসব এলাকার কিছু অংশে এখনো বেড়িবাঁধ নেই। তাই আতঙ্কে আছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। ৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ের পর ২৭ বছর পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় বাঁধসমূহ বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
আজ কক্সবাজার চট্টগ্রামসহ ‍উপকূলীয় এলাকায় সেই দিনের ভয়াল স্মৃতির স্মরণে দোয়া মাহফিল, খতমে কুরআন ও টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণের দাবীতে র‌্যালী-মানবন্ধন করে স্বজনদের স্মরণ করছে মানুষ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন