মশার উৎদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে জনজীবন। শুধু রাতেই নয়, দিনের বেলায়ও মশার উৎপাত চলছে সমানে। দিনে-রাতে মশার উপদ্রব দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে। মশার যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে কয়েল ও এ্যারোসলসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করতে হচ্ছে শহরবাসীকে। আর এ সব কিনতে শহরের মানুষকে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে। এতে করে প্রতি মাসে বিপুল অংকের টাকা ব্যয় হচ্ছে তাদের। তবু মশার হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না তারা। এতে যেমন মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম বিঘিœত হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে মশাবাহিত রোগ
বালাইয়ের আতংকে ভুগছেন অনেকে। এদিকে, মশার উৎপাত বৃদ্ধিতে শহর জুড়ে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেছে সৈয়দপুর পৌরসভা। গত ১ এপ্রিল সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন সরকার মশা নিধন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। অভিযানে পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে ড্রেন, নালা- নর্দমাসহ মশার আবাসস্থলে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘিঞ্জি শহর সৈয়দপুরে মশার উপদ্রব মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। আর মশার উপদ্রব এমনই বেড়েই যে, দিনের বেলাতেও স্বাভাবিকভাবে বসে কোন কাজকর্ম করা সম্ভব হচ্ছে না। আর সন্ধ্যা নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে মশার উৎপাত অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে। তখন মশারির নিচে কিংবা মশা নিধন উপকরণ ছাড়া বসে থাকা দূরূহ হয়ে পড়ে। মশার উপদ্রবে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে চলতি এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার্থীরা। মশার উৎপাতে তারা রাতে ঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারছে না। এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী শহরের বাঙালীপুর নিজপাড়া এলাকার মিফতাহুল জান্নাত মীম জানান, মশার কারণে রাতে বেলায় পড়ার চেয়ার টেবিলে বসে লেখাপড়া করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অনেকটা নিরুপায় হয়ে তাকে মশারি টাঙিয়ে বিছানায় বসে লেখাপড়া করতে হচ্ছে।
পৌর সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ড ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে শত কিলোমিটারের বেশি ড্রেন-নর্দমা রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বহু ডোবা, জলাশয় ও মজা পুকুর। মশার এসব আবাসস্থলে মশার বিস্তার রোধ করতে নিয়মিত পরিচ্ছন্ন কাজ করছে পৌরসভার পরিচ্ছন্ন শাখা। সেই সঙ্গে পরিচালনা করা হচ্ছে মশক নিধন অভিযান।
এ ব্যাপারে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম নেতা মো. রুহুল আলম মাস্টার জানান, মশা নিধনে পৌরসভার উপর ছেড়ে দিলেই হবে না, এর সঙ্গে শহরবাসীকে সচেতনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজের আবাসস্থল পরিচ্ছন্ন রাখতে বসবাসকারীদের সহযোগিতা করতে হবে। বাড়ির ময়লা -আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলা উচিত। এমনটি করা হলে মশার উৎপাত অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
মশা নিধন কার্যক্রম সম্পর্কে সৈয়দপুর পৌর কাউন্সিলর ও পরিচ্ছন্ন শাখার একটি সূত্র জানায়, মশা নিধন করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের ড্রেন-নর্দমা বাসাবাড়ি ও মশার আবাসস্থলে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এ কাজ নিবিড়ভাবে করতে ফগার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। মশা বিস্তারের উৎস মশার ডিম ও লার্ভা ধ্বংসে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালিত হওয়ায় এর সুফল শিগগির পাওয়া যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন