চট্টগ্রাম ব্যুরো : কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত বুধবার থেকে চলে আসা চট্টগ্রামে ডাক্তারদের লাগাতার ধর্মঘট আজ রোববার ৫ম দিনে বিকেলে ‘সাময়িকভাবে স্থগিত’ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন- বিএমএ’র চট্টগ্রামের নেতারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিকেল থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বারগুলো। শনিবার মধ্যরাত থেকে চলে আসা সমঝোতা প্রক্রিয়ার পর আজ দুপুর থেকে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরোয়ারসহ নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় এ ব্যাপারে সমঝোতা হয়েছে। বিশেষ করে আগামী ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকে সামনে রেখে বিএমএ’র এহেন আন্দোলন থেকে সরে আসার ব্যাপারে তীব্র সমালোচনা এবং চাপ আসছিল পেশাজীবীসহ বিভিন্ন মহল থেকে। বিকেলে বৈঠক শেষে চমেক হাসপাতালের শাহ আলম বীরউত্তম মিলনায়তনে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার এক সমাবেশে বিএমএ সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ব্যক্তিগত চেম্বারে বন্ধ রাখার আন্দোলন তারা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। তিন জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিষয়ে ‘সম্মানজনক’ সমাধানের আশ্বাস পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সমাবেশে সিটি মেয়র রোগীদের চরম দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আন্দোলন বন্ধের জন্য চিকিৎসকদের প্রতি অনুরোধ জানান। তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি বাদীপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন ও সমাধানের পথ বের করবেন বলেও আশ্বাস দেন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার। এর আগে আজ বিকেল পর্যন্ত বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সকল বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়গনিস্টিক সেন্টার ও চেম্বার বন্ধ থাকায় অগণিত রোগী ও তাদের স্বজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় টানা ৫ দিন ধরে। চমেক হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল চালু থাকলেও সেখানে রোগীর ভিড় তীব্র। প্রসঙ্গত, গত ১০ জানুয়ারি নগরীর বেসরকারি সার্জিস্কোপ হাসপাতালে প্রসূতি মেহেরুন্নেছার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসক মাহবুবুল আলম ও শামীমা সিদ্দিকী রোজীর অবহেলার অভিযোগে ১৯ জানুয়ারি আদালতে মামলা করেন নিহতের স্বজনেরা। মেহেরুন্নেছা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ভাতিজি। তাছাড়া একই দিন চমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক রানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে মামলা করেন রোগীর স্বজন। পরদিন বুধবার থেকেই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে চিকিৎসকদের ধর্মঘট শুরু হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন