শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

বকেয়া মজুরিসহ শ্রমিকদের ৫ দফা দাবি রাষ্ট্রায়ত্ত জুটমিলে ধর্মঘটের সাথে ফের লাগাতার অবরোধের ডাক

প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

খুলনা ব্যুরো : খুলনা-যশোর অঞ্চলের সরকারি সাতজুট মিল শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ, পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দসহ পাঁচ দফা দাবিতে ধর্মঘটের সাথে এবার লাগাতার রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সাথে খুলনার ডিপো থেকে ট্রেন যোগে উত্তর বঙ্গে তেল সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। আগামী রোববারের মধ্যে দাবি আদায় না হলে সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় খালিশপুর বিআইডিসি সড়কে শ্রমিক জনসভায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত জুটমিল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের নেতারা এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের আহŸায়ক মো. সোহরাব হোসেন। বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড হাফিজুর রহমান ভূইঞা, ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা মো. শাহ আলম, মো. হারুন অর রশিদ মল্লিক, এস এম জাকির হোসেন, মো. কাওছার আলী মৃধা, মো. দীন ইসলাম, মো. খলিলুর রহমান, মো. বিল্লাল হোসেন মল্লিক, আ. মান্নান, মো. আলাউদ্দিন, মো. হাসান উল্লাহ, মো. জাহিদুল ইসলাম, আ. সালাম জমাদ্দার, আ. রশিদ ও মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ।
বাংলাদেশ জুটমিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) খুলনার লিয়াজোঁ কর্মকর্তা মো. মোহাব্বত আলী বলেন, খুলনা যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে প্রতিদিন ১৪০ মেট্রিক টন পাটজাত পণ্য উৎপাদন হতো। সে হিসাবে ৪ দিনের ধর্মঘটের ফলে উৎপাদন ঘাটতি হয়েছে ৫৬০ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। এছাড়া আরও সোয়া কোটি টাকার পাট উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আটকে থেকে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আর সোমবারের উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য ছিল ১৫৪ মেট্রিক টন পাট। যা ৪ দিন ওই অবস্থাতেই রয়েছে। প্রক্রিয়াজাত অবস্থায় থাকা পাট দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের পর পণ্য উৎপদনে মান কিছুটা খারাপ হয়। তবে, বিশেষ ব্যবস্থায় সে অবস্থার উত্তরণ ঘটানো সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, স্টার, ক্রিসেন্ট ও প্লাটিনাম জুটমিলের শ্রমিকদের ৮ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া। এই ৩টি মিলের শ্রমিকদের দু’সপ্তাহের মজুরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেএমসির চেয়ারম্যান। সেক্ষেত্রে বিজেএমসির ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকরা সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, উৎপাদন বন্ধ থাকলে বিদেশি বায়ারদের সঙ্গে চুক্তি রক্ষা করা কঠিন হবে। সেক্ষেত্রে মিলগুলোর সুনাম নষ্ট হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের আহŸায়ক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, শ্রমিকরা নিয়মিত কাজ করার পরও ৮ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এ অবস্থায় বকেয়া আদায়ে ধর্মঘটের বিকল্প ছিল না। শ্রমিকরা যদি মজুরি না পায়, তাহলে মিলে উৎপাদন অব্যাহত রেখেও কোনো লাভ নেই। তাই শ্রমিকরা বকেয়া আদায়ে তৎপর। তিনি প্রশ্ন রাখেন বায়ারদের কাছে সুনাম ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব যদি শ্রমিকরা নিতে পারে, মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি নিয়মিত প্রদানের দায়িত্ব কেন নিতে পারে না। শ্রমিকরা না খেয়ে মিল চালু রাখতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন