শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রমেক হাসপাতালে তৃতীয় দিনের মত চলছে ইন্টার্নী ডাক্তারদের কর্মবিরতি

প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রংপুর জেলা সংবাদদাতা : টানা তৃতীয় দিনের মত চলছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্নীী ডাক্তারদের কর্মবিরতি। ফলে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে রোগী ও তার স্বজনরা। অনেকে রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন ক্লিনিকগুলোতে। এদিকে রোববার ইন্টার্নী ডাক্তাররা প্রতীকী অনশন কর্মসূচি ও সমাবেশ করে। সেখানে তাদের দাবি সমুহ মেনে নেওয়া না হলে হাসপাতালের ইর্মাজেন্সি বিভাগ বন্ধসহ সড়ক অবরোধ কর্মসুচি পালন করার ঘোষণা দেয়া হয়।
হাসপাতাল ও ইন্টার্নী ডাক্তার সূত্রে জানা গেছে, ইন্টার্নী ডাক্তাররা গতকাল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করে। এরপর সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইন্টার্নী ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মাহমুদুর রহমান রিফাত, সাধারন সম্পাদক ডা. বিজন সরকার, ডা. নাজমুল হুদা, ডা.রওজাতুল রোম্মান, ডা. নাজমুল নিশাত প্রমুখ । বক্তারা আজ রোববারের মধ্যে যদি তাদের ৫ দফা দাবি সমুহের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না দেখেন তবে কাল সোমবার থেকে হাসপাতালের ইমাজেন্সি বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া হাসপাতাল সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে রাখা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে, রোববার ছিল ইন্টার্নী ডাক্তারদের কর্মবিরতির তৃতীয় দিন। বৃহসপতিবার থেকে ইন্টার্নী ডাক্তাররা কর্মবিরতি শুরু করে। একটানা তিনদিন ধরে চলা এ কর্মবিরতিতে রোগিরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ১ হাজার শয্যা এ হাসপাতালে প্রতিদিন দু থেকে আড়াই হাজার রোগি চিকিৎসা নেয়। ইন্টার্নী ডাক্তারা কর্মবিরতি শুরু করায় রোগিদের নাজেহাল অবস্থা হয়েছে। এতে করে অনেক রোগি হাসপাতাল ছাড়তে শুরু করেছে।
অপরদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইন্টার্নী ডাক্তারদের দাবি সমুহ নিয়ে তাদের সাথে বৈঠকে বসেন। হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে রোববার দুপুরের এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, হাসপাতালের পরিচালক ডা. আ.স.ম. বরকতুলাহ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারন সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী লাইজু, বিএমএ কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. সৈয়দ মামুনুর রহমান, এস .পি আবদুলাহ আল ফারুখ, ইন্টার্নী ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মাহমুদুর রহমান রিফাত, সাধারন সম্পাদক ডা. বিজন সরকারসহ সিনিয়র শিক্ষকসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় এক ঘন্টা চলা বৈঠকে পরিচালক ও এএসপি ফারুখ ঘোষণা দেন ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হবে। সেই সাথে পুলিশ টহল জোরদার, হোস্টেলগুলোকে নিরাপত্তাকর্মী বৃদ্ধিসহ ইন্টার্নি ডাক্তারদের অন্যান্য দাবিসমুহ মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু এরপরেও ইন্টার্নী ডাক্তাররা সাংবাদিকদের জানান, আমরা আমাদের দাবি সমুহের দৃশ্যমান দেখতে চাই রাতের মধ্যেই। তাহলে কাল সোমবার থেকে আমরা কাজে যোগ দেব।
এব্যাপারে ইন্টার্নী ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মাহমুদুর রহমান রিফাত জানান, আমাদের দাবিসমুহ মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসব দাবি সমুহের দৃশ্যমান দেখতে চাই। তা না হলে আরো কঠোর কর্মসুচি ঘোষণা দেওয়া হবে। তিনি জানান আজ রাতের মধ্যে দাবিসমুহ পুরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পেলে কাল সোমবার সকাল থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আমরা কাজে যোগ দেব।
এব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. আ.স.ম. বকতউলাহ জানান, ইন্টার্নী ডাক্তারদের সাথে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। তাদের দাবি সমুহ মেনে নেওয়া হয়েছে। তাই ইন্টার্নী ডাক্তাররা সোমবার থেকে কাজে যোগ দেবেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ইন্টার্নী ডাক্তার সুমন মিয়া ডিউটি শেষে হাসপাতাল থেকে ক্যাম্পাসের হোস্টেলে ফেরার পথে তার উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা সুমনকে বেদম মারপিট করে নগদ অর্থ ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এর আগে গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের ক্যাম্পাসে আরো ৩টি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে বলে তারা অভিযোগ করেন ইন্টার্র্নি ডাক্তাররা। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাত থেকে ইন্টার্নি ডাক্তাররা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন