পীর সাহেব জৌনপুরী আল্লামা ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেছেন, সুন্নাহর পূর্ণ অনুসরণ এবং মারেফত ও তাসাউফ শিক্ষা ছাড়া সার্বিক ইসলামী আন্দোলনের ময়দানে সফলতা পাওয়া সম্ভব নয়। নারায়ণগঞ্জ পাঠানটুলীস্থ আব্বাসী মঞ্জিলে জৌনপূরী ভক্তদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দান কালে তিনি একথা বলেন।
পীর সাহেব বলেন, শরিয়ত তরিকত মারেফত হাকীকত এই চারটি বিষয়ের ইলমই রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বে বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছেন। ইলমে তরিকত এবং মারেফত চর্চা ছাড়া কারো পক্ষে ইনসানে কামেলে পরিণত হওয়া সম্ভব নয়। তরিকতের মহান ইমাম সাহরোওয়ার্দী আওয়ারিফুল মায়ারিফ কিতাবে লিখেন “ আশ শারিয়াতু কাল্লাবানী ওয়াল মারেফাতু কাজ জুবদা ” অর্থাৎ শরীয়ত হচ্ছে দুধ আর মারেফত হচ্ছে সেই দুধের মাখন। কিন্তু অধিকাংশ মুসলমানই তরিকত চর্চা থেকে দূরে অবস্থান করছে। বিশেষ করে যারা মুসলমানদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের অধিকাংশ আলেম-ওলামা, ইসলামী নেতৃত্ববৃন্দ ও পীর মাশায়েখ গণ তরিকত চর্চা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ভ্রান্ত মতধারী। ইসলামী দল সমূহের ব্যর্থতার পিছনে এটাই মূল কারণ। অথচ ইতিহাস সাক্ষী সামগ্রীক ইসলামী আন্দোলনের ময়দানে তরিকত পন্থীরাই সফল নেতৃত্ব দিয়ে কাঙ্খিত সফলতা লাভ করেছেন। মুজাদ্দেদ আলফেসানী (রঃ) তার আন্দোলনে তাগুত বাদশা আকবরের সা¤্রাজ্য ধুলার সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন। সাম্প্রতিক কালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান নকশেবন্দীয়া তরিকার একজন সালেক (মুরিদ)। অটোমান সা¤্রাজ্যের বিপর্যয়ের পর অভিশপ্ত কামাল আতাতুর্কের ধর্ম নিরপেক্ষ মতাদর্শ যখন তুরস্ক বাসির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল তখন নাস্তিকতাবাদের অভিশাপ থেকে আবারো তুরস্ক বাসিকে ইসলামী মুল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ময়দানে আসেন নকশেবন্দীয়া তরিকার অন্যতম ইমাম আল্লামা বাদিউজ্জামান নুরসি (রঃ) । যার হাতে গড়া সৈনিক ছিলেন নব্য তুরস্কের ইসলামী আন্দোলনের রূপকার প্রফেসর নাজমুদ্দিন এরবাগান। বর্তমান তারই উত্তর সূরী তুরস্কের ইসলামী আন্দোলনের লৌহ পুরুষ রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। তিনি কুরআনে হাফেজ, একজন স্বনামধন্য ক্বারী । চরম ধৈর্য্য ও সাহসিকতার সাথে আল্লাহর গাইবী মদদে তুরস্ক ও তুরস্কের বাইরে ইসলামী বিশ্বে সফল ভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তরিকত ও আধ্যাতিক চর্চাই এর মূল কারণ। যারা তাকে খ্রিষ্টানদের দালাল বলে আখ্যায়িত করে তারাই মূলত ইহুদি খ্রিষ্টানদের দালাল ।
পীর সাহেব বলেন, ইসলামী আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদেরকে কুরআন সুন্নাহ পন্থী সহীহ আকিদার ধারক, আল্লাহ ওয়ালা, পীর মাশায়েখদের সুহবতে গিয়ে তরিকত চর্চার মাধ্যমে নিজেদেরকে আল্লাহর গাইবী মদদ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে ইসলামী আন্দোলনের ময়দান সফলতা আনতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন