টানা ১৫ দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশে অবস্থানের পর আজ থেকে আমরণ আনশনে যাচ্ছেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। গতকাল রোববার সকাল পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী সকাল থেকেই ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভুষণ রায় এর নেতৃত্বে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী খোলা আকাশের নীচে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার এ ঘোষণা দেন।
শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, আজকে (রোববার) সন্ধার মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে, আগামীকাল (সোমবার) সকাল ১০টা থেকে শিক্ষকরা আমরণ অনশন শুরু করবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। আমরণ অনশনে যে কোনো ধরনের অপ্রিতীকর পরিস্থিতির জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী দায়ি থাকবেন।
তিনি সংগঠনের সকল শিক্ষক-কর্মচারীর বাবা-মা, স্ত্রী-পুত্র, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, কোমলমতি শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ, সুশিল সমাজ, সংবাদকর্মি সহ দেশের আপামর জনসাধারনের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, মৃত্যুর মুখোমুখি হলেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি বাস্তবায়ন না নিয়ে রাজপথ ছাড়বোনা এটা শিক্ষক কর্মচারীদের শপথ। এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ডা. বিনয় ভুষণ রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং উপস্থিত শিক্ষকরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এর আগে ২৩ তারিখ বৃষ্টিতে ভিজে প্রতিকী অনশন পালন করেন শিক্ষকরা।
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, নতুন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে তিনি নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। তারপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা ১৫ দিন ধরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশে আন্দোলন করে যাচ্ছেন নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।