ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে মাড়ি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। টাইপ-১ এবং টাইপ-২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে মাড়ির নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। তবে তুলনামূলকভাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে মাড়ি নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। তবে তুলনামূলকভাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে মাড়ি রোগের বিভিন্ন জটিলতা বেশি দেখা যায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে ডায়াবেটিক রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় জীবাণু সংক্রমন দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এসব কারণে মাড়ি রোগ সৃষ্টি হলে সেখানে পেরিওডন্টাল পকেট সৃষ্টি হয় তারপর ধীরে ধীরে পেরিওডন্টাল পকেটে খাদ্য দ্রব্য জমা হয়ে মাড়ি ফুলে যেতে পারে। সেখান থেকে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে পেরিওডন্টাল লিগামেন্টগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং একসময় দেখা যায় দাঁত নড়তে শুরু করে। রোগীর মুখে শুকনো ভাব থাকে। মাঝে মাঝে স্যালাইভারী গ্যান্ড বা লালাগ্রন্থি ফুলে যেতে পারে যা সায়ালেসিস নামে পরিচিত। এটি সাধারণত স্বয়ংক্রিয় নিউরোপ্যাথির কারণে হতে পারে। জিহ্বার প্রদাহ দেখা যেতে পারে বা জিহ্বার ফিলিফরম প্যাপিলার পরিবর্তন আসতে পারে। ফলে খাবারের স্বাদ গ্রহণে সমস্যা হতে পারে। খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করার সময় জিহ্বায় অনেক সময় ঝাল ঝাল অনুভব হতে পারে। ক্লোরপ্রোপামাইড ব্যবহারের কারণে মুখের মিউকোসাতে লাইকেনয়েড রিঅ্যাকশন দেখা যেতে পারে। অন্যান্য এন্টিবায়োটিক ওষুধের কারণেও এমনটি হতে পারে। ক্লোরপ্রোপামাইডের কারণে ফেসিয়াল ফ্লাসিং হতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ যদি দুর্বল হয় তাহলে ওরাল ক্যান্ডিডোসিসের সৃষ্টি হতে পারে। ডায়াবেটিস ইনসিপিডাসের ক্ষেত্রে দন্তচিকিৎসা বিদ্যায় সাধারণত তেমন সমস্যা হয় না মুখের শুষ্কতা ছাড়া। ক্ষণস্থায়ী ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস হেড ইনজুরির জটিলতা হিসেবে দেখা যায়। কার্বামাজেপেইন ওষুধ যা ব্যবহার করা হয় ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়াতে সেটির নেশাকারী কার্যকারিতা থাকতে পারে ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে।
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে মাড়ি রোগে সামান্য আঘাতে মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হয়। মাড়ি স্পঞ্জের মতো নরম তুলতুলে হয়ে যায়। দাঁত নড়ে যেতে পারে। দাঁত শিরশির করা ছাড়াও মাড়ি থেকে পুঁজ বের হতে পারে। মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়া ছাড়াও খাবার গ্রহণের সময় দাঁতে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। ডায়াবেটিস হলে কোনোভাবেই মাড়ির রোগকে অবহেলা করা যাবে না। আপনার দাঁতে যদি পাথর থাকে তাহলে অবশ্যই স্কেলিং করিয়ে নিতে হবে। তাছাড়া নিয়মিত দাঁতব্রাশ করা ছাড়া মাঝে মাঝে মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। তবে সঠিক মাউথওয়াস ব্যবহার না করলে অনেক সময় মুখে আলসার বা ঘাঁ থাকলে তা সহজে ভালো হয় না। সর্বোপরি যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে জীবনযাপন করতে হবে।
ষ ডাঃ মো. ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭,
ই-মেইল : ফৎ. ভধৎঁয়ঁ@মসধরষ.পড়স
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন