শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

নির্মাণকাজে ধীরগতি সাত বছরেও সম্পন্ন হয়নি জবি‘র ছাত্রী হলের কাজ

নাইমুর রহমান নাবিল | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৮, ৭:২২ পিএম



সাত বছরেও শেষ হয়নি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের (বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব) নির্মাণ কাজ। ২০১১ সালে তিন বছর মেয়াদী প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। এরপর ৪ দফা কাজের মেয়াদ বাড়িয়েও ছাত্রী হলটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারছেনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন। এদিকে কাজের এই ধীরগতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী করছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করছেন।
গত সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢিলেঢালাভাবে চলছে হলটির নির্মাণকাজ। ১৫ তলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাই দিলেও এখনো অনেক কাজ বাকি। নির্মাণাধীন ভবনটি ১৬ তলা হওয়ার কথা রয়েছে। এতে ১১১টি কক্ষ, একটি লাইব্রেরি, একটি ক্যান্টিন, একটি ডাইনিং, প্রতি তলায় সাতটি করে টয়লেট, আটটি গোসলখানা, ছাত্রীদের ওঠা নামার জন্য চারটা লিফট করা হবে। এগুলোর আংশিক কাজ হলেও বেশির ভাগ কাজই এখনো করা হয়নি। লিফট, সাবস্টেশন এবং গভীর নলকূপের কোনো দরপত্রই আহ্বান করা হয়নি এখন পর্যন্ত। বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ বুঝিয়ে দিলেও অবশিষ্ট কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত হলে ছাত্রীদের ওঠানো সম্ভব হবে না।
জানা যায়, প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারিতে। যার মেয়াদ ছিল ২০১৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ে তা সম্ভব না হওয়ায় মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করে সরকার। এরপরও প্রকল্পটি সম্পন্ন না হওয়ায় বিশেষ শর্তে আবার মেয়াদ ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ ৪ দফায় আগামী বছর জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্পটি আবার চালু করা হয়। ফলে নির্মাণের মধ্যেই চলে যেতে বসেছে ৭টি বছর।
প্রথমে ২০তলা ভিত্তির উপর ১৬তলা ভবনের এ হলটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ৩৬ মাস। যার বাস্তবায়নের ভার ন্যস্ত হয় শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের ওপর। কিন্তু সাত বছরেও শেষ হয়নি জবির ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ। প্রকল্পের দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হল নির্মাণে দায়িত্বরত প্রজেক্ট ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, যদিও এ বছরেই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ভবনের কাজ করার জন্য আশপাশে যে পরিমাণ জায়গার প্রয়োজন সেই পরিমাণ পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই একপাশ থেকেই কাজ চালাতে হয়। এছাড়াও নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির ফলে কাজ করতে না পারার কারণে সময় বেড়েছে। আশা করি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই হলটির নির্মাণ কাজের ধীরগতির সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, নতুন কোন হল নির্মিত হচ্ছে না। কয়েক দফা আন্দোলনের ফসল মেয়েদের এই হল দেখিয়ে বিভিন্ন সময় হল আন্দোলন বন্ধের চেষ্টা করেছে প্রশাসন। কিন্তু মেয়েদের এই হলটি এখনো নির্মাণ করতে পারেনি প্রশাসন। যেখানে তিনবার মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ সময়মতো শেষ করা যায়নি, তখন চতুর্থবারেও শেষ হবে কিনা তাই দেখার বিষয়। হলের কাজ আগামী ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী মো: ওহিদুজ্জামান বলেন, হল বিষয়ে আমাদের কোন এক্তিয়ার নেই এই বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীই ভালো বলতে পারেন। আমারা বিভিন্ন সময় তাদের চাপ প্রয়োগ করেছি কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য। তবে আশা করছি আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে বেলা ১২ টায় অফিস থেকে জানানো হয় তিনি অফিসের বাহিরে মিটিংয়ে আছেন পরে যোগাযোগ করুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন