শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

ত্রিমুখী ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সায়ীদ আবদুল মালিক : প্রচ- তাপদাহ ও ত্রিমুখী ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী বিদ্যুতের লোডশেডিং, নগরজুড়ে তীব্র পানি সঙ্কট আর অপরিকল্পিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে যানজটের কবলে পড়ে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ। প্রকৃতিতে চলছে প্রচ- তাপদাহ। এ অবস্থার মধ্যেই আজ থেকে শুরু হয়েছে গ্রীষ্ম মৌসুম।
গ্রীষ্মের প্রচ- তাপদাহে প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত, তখন রাজধানীজুড়ে চলছে বিদ্যুতের আসহনীয় লোডশেডিং। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়বার বিদ্যুত আসা যাওয়া করে। একবার বিদ্যুৎ গেলে কমপক্ষে একঘণ্টার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। বিদ্যুতের অভাবে পানির পাম্পগুলোতেও চাহিদামত পানি উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে রাজধানীর অধিকাংশ এলাকাতেই সুপেয় পানির জন্য চলছে হাহাকার। পানির অভাবে নগরবাসীর দৈনন্দিন রান্না, গোসলসহ আনুষঙ্গিক সকল কাজ অনেকটাই থেমে গেছে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পানির জন্য পাম্পে দীর্ঘ লাইন পড়ে। অন্যদিকে ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের ছোটবড় সাত শতাধিক সড়কে একযোগে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নেই কোন সঠিক তদারকি। ঠিকাদাররেরাও যে যেমন খেয়ালখুশি মত কাজ করছে। এ কাজের জন্য সরকারের সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি থাকলেও তা মানছে না কেউ। রাজধানীর অনেক রাস্তাই এখন চলাচলের অনুপযুক্ত। নগরীর পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণের প্রায় সব এলাকার পাড়া-মহল্লার রাস্তাও পড়েছে এ অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির কবলে। এতে প্রতিদিন নগরবাসীকে রাস্তায় নেমেই পড়তে হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তিতে।
অসহনীয় লোডশেডিং : রাজধানীতে বিদ্যুতের লোডশেডিং তীব্র আকার ধারণ করেছে। দিনে রাতে পাঁচ থেকে ছয়বার লোডশেডিং হচ্ছে। একবার বিদ্যুৎ গেলে কমপক্ষে এক ঘণ্টার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ৮/১০ ঘণ্টার লোডশেডিং হচ্ছে। আবার যেটুকু সময় বিদ্যুৎ থাকে তা-ও আবার ভোল্টেজ কম। লো ভোল্টেজের কারণে বাতি জ্বলে নিভু নিভু আর বৈদ্যুতিক পাখা যেন ঘোরতেই চায় না। সবমিলে চলমান প্রচ- তাপদাহের সময় বিদ্যুতে লোড়শেডিংয়ের কারণে রাজধানীবাসী পড়েছে মহা ভোগান্তিতে। বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা থাকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। এ সময়টাকে পিক আওয়ার ধরে সর্বোচ্চ চাহিদা নির্ধারণ করা হয়। রাত ১১টার পর বিদ্যুতের চাহিদা কমতে থাকলেও লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমছে না; বরং দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমানে রাজধানীতে মধ্যরাতেও লোডশেডিং হচ্ছে। অনেক সময় দিনের শুরু হচ্ছে লোডশেডিং দিয়ে, আবার সন্ধ্যা বাতির সময়েও নামে লোডশেডিং। এর কোন সঠিক সময় নেই। লোডশেডিংয়ের এ অবস্থা বিরাজ করছে এখন রাজধানীর সব এলাকাতেই। এ কারণে পরিবারের শিশুদের পাশাপাশি বৃদ্ধ ও অসুস্থরা বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে। প্রতিদিন ৮/১০ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজে রাখা মাছ, গোশত, তরিতরকারি পচে যাচ্ছে। ওয়াসার পাম্প ঠিকমতো চালাতে না পারায় অনেক এলাকায় পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিøষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গরমের এ চলতি মৌসুমে বিদ্যুতের লোডশেডিং আর কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা সর্বোচ্চ ব্যবহার করেও চাহিদার সাথে সরবরাহের সমন্বয় করা যাচ্ছে না।
গতকাল (বুধবার) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এ নিয়ে ফোনে ইনকিলাবের কাছে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, প্রচ- এ তাপদাহে ইসলামবাগ এলাকা যেন অগ্নিগর্ভ হয়ে পড়েছে। তার উপর প্রতি তিন ঘণ্টা পর পর বিদ্যুতের লোডশেডিং করা হচ্ছে। আর স্থায়ী হচ্ছে এক ঘণ্টা। একে তো তীব্র গরম, এর ওপর বিদুুৎ না থাকায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং করায় আইপিএসের চার্জও থাকছে না। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর বৈদ্যুতিক পাখা কিছুক্ষণ চালু থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে ফোনে অনেকটা ক্ষাভ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের উন্নয়নের দাবি বাস্তবে তারা দেখতে পাচ্ছেন না। অথচ তারা এক হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল চার হাজার টাকা গুনছেন।
মানিকনগরের বাসিন্দা অহিদুজ্জামান রোমানা বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। লোডশেডিং স্থায়ী হচ্ছে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। সারা দিন এ দিক সে দিক কাটানো যায়। কিন্তু রাতে তো বাইরে বের হওয়া যায় না। লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় ঘরে থাকাও দায় হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি, মশার উপদ্রব তো রয়েছেই।
তীব্র পানি সঙ্কট :
গ্রীষ্মের প্রচ- তাপদাহে প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত; তখন রাজধানীজুড়ে চলছে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার। পানির অভাবে নগরবাসীর দৈনন্দিন রান্না, গোসলসহ আনুষঙ্গিক সকল কাজ অনেকটাই থেমে গেছে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পানির জন্য পাম্পে দীর্ঘ লাইন দেয়া হয়। কোন কোন এলাকায় পানি সঙ্কট চলছে গত ১৫ দিন ধরে। আবার অনেক এলাকাতে ওয়াসার যেটুকু পানি পাওয়া যায় তাও ময়লা এবং দুর্গন্ধযুক্ত। এসব পানি পান করে শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে গতকাল (বুধবার) সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন রাজধানীর পানি বিতরণ সংস্থা ওয়াসার পানি বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। একই সঙ্গে ঢাকায় পানি সঙ্কট দূর হতে আরো এক বছর সময় লাগবে বলেও তিনি জানান।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এখন থেকে ওয়াসার পানি বিক্রি করা যাবে না। এই পানি বিক্রির সুযোগ নিয়ে একটি দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি হয় এবং ওয়াসার কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। মন্ত্রী আরো বলেন, যেখানে পানির সঙ্কট, সেখানে ওয়াসার দায়িত্ব হলো পানি পৌঁছে দেয়া। এখন যে পানি সঙ্কট আছে ঢাকায়, এটা দূর হতে আরো এক বছর সময় লাগবে।
রাজধানীবাসীর সুপেয় পানির সঙ্কটসহ বেশকিছু সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ঢাকা ওয়াসা বেশকিছু প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার ঘোষণা দেয়। এ কর্মসূচির আওতায় নগরীতে দীর্ঘদিনের পুরনো পানির লাইন পুনরায় স্থাপন, নতুন পানির লাইন সংযোজন, বক্স কালভার্ট-ড্রেনেজ লাইনের সংস্কার ও উন্নয়ন এবং খাল পুনরায় খনন করে নগরীর সব জলাধার সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। জানা গেছে, ওয়াসার এ কর্মপরিকল্পনাগুলোর বেশিরভাগই এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। তাই এবছরও ওয়াসার পানি সঙ্কট সমাধানের কোন সম্ভাবনা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা।
গত কয়েকদিন ধরে গরমের দাবদাহ যতই বাড়ছে পানির চাহিদাও ততই বাড়ছে। এ অবস্থায় রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় সুপেয় পানির সঙ্কট তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে। এতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন।
রামপুরার অধিবাসী গৃহবধু শামীমা বেগম বলেন, বাসায় ছোট্ট মেয়েটাকে রেখে নিজেই ঢাকা ওয়াসার জোন অফিসে গিয়ে জারে করে টাকার বিনিময়ে পানি নিয়ে এসে আবার নিচ থেকে চার তলায় তুলতে হয়। আর যে ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত পানি আসে তাতে ছোট্ট মেয়েটার ডায়রিয়া হয়ে গিয়েছিল। পেটের অসুখে ভুগতে হয়েছিল পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে। মাদারটেকের বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, বাসার পানিতে লাল রং আর ছোট ছোট ময়লা আসে। পানির এ দুর্গন্ধের কারণে এরপর তাই টাকার বিনিময়ে গৃহকর্মীকে দিয়ে পানি টেনে আনতে হচ্ছে কলসি বা কন্টেইনারে ভরে বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির থেকে।
বাসাবো বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের পাশে লাইন ধরে সারি করে রাখা হয়েছে পানি বহনের সরঞ্জামাদি যেমন, ড্রাম, কলসি, বোতল, জার প্রভৃতি। এখানে পানি নিতে আসা অনেকেই মন্তব্য করেন, সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কারণে পানির এ দুর্গন্ধময় অবস্থা। যাত্রাবাড়ী থেকে পানি নিতে আসা রাইমা বেগম বলেন, পানি তো কলে থাকেই না। যেটুকুই বা থাকে তাতে ছোট ছোট নুড়ি, বালুর সঙ্গে দুর্গন্ধ। তা দিয়ে কোনোরকমে গোসল সারতে হয়। কিন্তু খাওয়া আর রান্নার জন্যই মূলত এখান থেকে পানি নেওয়া। আবার স্থানীয় মসজিদ থেকেও ঢাকা ওয়াসার পাইপ থেকে পানি সংগ্রহ করেন বলে জানান মুগদাপাড়ার বাসিন্দরা।
খোঁড়াখুঁড়িতে আসনীয় যানজট :
ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের ছোটবড় সাত শতাধিক সড়কে একযোগে চলছে খোঁড়াখুড়ি। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নেই কোন সঠিক তদারকি। ঠিকাদাররেরা যে যেমন খেয়ালখুশি মত কাজ করছে। একটু বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে রাস্তায় চলাচলের উপায় থাকে না। রাস্তার মাঝখানে যখন তখন বিকল হয়ে যাচ্ছে গাড়ি। প্রতিনিয়তই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। অফিস আদালত মুখি মানুষ ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা সকাল বেলায় ঘর থেকে বের হয়েই পড়ছে চরম ভোগান্তিতে। কোথায়ও অসহনিও যানজটে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে আবার কোথায় যানবাহনেরে সঙ্কটে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্ট। অন্যদিকে রোদ উঠলে বাতাসে ধুলা-বালি উড়ে চোখ-মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নিঃশ্বাসের সাথে এ ধুলা-বালি নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্ট ও এজমাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী।
গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর অভিজাত এলাকা উত্তরা মডেল টাউনের বিভিন্ন রাস্তা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাও, বাসাবো, মুগদাপাড়া, মানিকনগর, যাত্রাবাড়ি, পুরান ঢাকার বিভিন্ন রাস্তা, মতিঝিল, শাহজাহানপুর, শাহবাগ, এ্যালিফেন্ট রোড, হাতিরপুল, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট সরজমিনে পরিদর্শন করে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন সড়ক ও অলি-গলিতে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এছাড়ও ভাঙাচুরা রাস্তা মেরামতের কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন। যে কারণে রাজধানীর প্রায় সবগুলো রাস্তাই এখন খোঁড়াখুঁড়ির কবলে পড়েছে। প্রতি বছর ৩১ মে’র মধ্যে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করার নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে থাকলেও এ বছর তা সম্ভব হবে না। কারণ এ বছর ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন একসাথে সাত শতাধিক সড়ক মেরামত ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন গুলশান-২ এর একটি সড়ক মেরামতের কাজসহ বড় বড় কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, এ কাজ শেষ হতে আরও ৮/৯ মাস সময় লেগে যেতে পারে। এদিকে অতিগুরুত্বপূর্ণ কোন কারণ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির অনুমোদন না দেয়ার জন্য ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে। এছাড়া সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ২৮দিনের মধ্যে উন্নয়ন কাজ শেষ করে পূনরায় রাস্তা মেরামত করে দেয়ার কথা থাকলেও উন্নয়ন কাজ শেষে মাসের পর মাস রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বাংলামোটর থেকে নিউ ইস্কাটন এলাকার দিলু রোড পর্যন্ত রাস্তা খুঁড়ে পানি সরবরাহ লাইন স্থাপন করছে ঢাকা ওয়াসা। দিলু রোডের মাঝ বরাবর খোঁড়ায় ও শ্যালোইঞ্জিন বসানোর কারণে ওই সড়কে কোনো ধরনের যানবাহন প্রবেশ করতে পারছে না। এতে কাদাযুক্ত পানি মাড়িয়ে সাবধানে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। অন্যদিকে মগবাজার মোড় থেকে পরিবাগ পর্যন্ত এবং রামপুরার উলন রোড থেকে মালিবাগ পর্যন্ত রাস্তা খুঁড়ে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনের কাজ করছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। এ এলাকার বাসিন্দাদেরও ভোগান্তির অন্ত নেই।
শুধু এই কয়টি স্থানে নয়, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে গুলশান, নিকেতন ও মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। দিনের বেলায় ব্যস্ততম সড়কগুলো খোঁড়াখুঁড়ি করে উন্নয়নকাজের কারণে অন্তহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে। অন্যদিকে এসব খোঁড়াখুঁড়ির কারণে প্রধান সড়কসহ গলিপথে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। আর এ যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মৌচাক-মগবাজার উড়াল সড়কের নির্মাণকাজ চলায় সড়কগুলো এমনিতেই সরু হয়ে আছে। এতে রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। তার ওপর নতুন করে ওয়াসা ও ডিপিডিসিসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ভূগর্ভস্থ লাইন স্থাপনের কাজ শুরু করায় মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। তারা বলেন, সরকারি সংস্থাগুলো জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি চিন্তা না করেই নিজেদের খেয়ালখুশিমতো খোঁড়াখুঁড়ি করছে, আবার নির্মাণকাজ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি সড়ক ও ফুটপাতের ওপর ফেলে রাখায় চলাচলের পথ সরু হয়ে আছে। এতে নির্মাণকাজ চলা কোনো কোনো এলাকার মানুষ যানবাহন ছেড়ে হেঁটেই কর্মস্থলে যাতায়াত করছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন