বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ঃ পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাবীবা জান্নাতকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা ও আপত্তিকর ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। পরে লিখিত ভাবে ওই পুলিশ সদস্য ক্ষমা চেয়েছে বলে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার বর্ষবরণ দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এই অভিযোগ উঠেছে কনস্টেবল রুহুল আমিন নামে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। গত বছর বর্ষবরণে একই জায়গায় যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে। এখনও আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, পুলিশের আইজি শহিদুল হক গাড়িতে করে দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি অতিক্রম করছিলেন। তাই সেখানকার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা রাস্তা থেকে সকল মানুষকে সরিয়ে দিচ্ছিলেন। সে সময় স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে থাকা ছাত্র ফেডারেশনের কর্মীদেরও সরে যেতে বলেন। তখন সবাই সরে যান। কিন্তু ওই নেত্রীর ওই স্থান থেকে একটু সরতে দেরি হয়। তখন রুহুল আমিন নামে এক পুলিশ কনস্টেবল তাকে গায়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। গায়ে ধাক্কা দিয়েছেন কেন বলে হাবীবা জান্নাত জানতে চাইলে ওই পুলিশ সদস্য আপত্তিকর ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এসময় ঘটনাস্থলে থাকা বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা ওই পুলিশ সদস্যকে তার আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে বলে। কিন্তু তাৎক্ষণিক তিনি ক্ষমা না চেয়ে উল্টো বাকবিতÐায় জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আইনি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়। এক পর্যায়ে বাম সংগঠনের নেতাদের সহযোগিতায় হাবীবা জান্নাত অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিচার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর ড. এ এম আমজাদ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে প্রক্টর অফিসে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দীর্ঘ সময় দুই পক্ষের আলোচনা শেষে ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত ক্ষমা চান পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন।
এ বিষয়ে হাবীবা জান্নাত বলেন, আইজিপির গাড়ি আসলে আমাদেরকে সরে যেতে বলা হয়। আমরা সরে যাচ্ছিলাম কিন্তু এক পুলিশ আমার গায়ে হাত দেন। তারপর আমি প্রতিবাদ করলে পুলিশ সদস্য খারাপ ভাষায় গালি দেয়। পরে আমি প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ সদস্য লিখিত ক্ষমা চান। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবীবা বেনজির বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু এক পুলিশ কনস্টেবল আমাদের সংগঠনের সহ-সভাপতির গায়ে ধাক্কা দেয় এবং অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়। যার কারণে আমরা ক্ষমা চাইতে বললে, তিনি লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন।
এ ব্যাপারে ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, আমরা সতর্ক ছিলাম। যে অভিযোগ এসেছে সেটি কাক্সিক্ষত নয়। এজন্য আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছি।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ বলেন, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন