বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঋণ সুদ না কমানোয় কঠোর হচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঘোষণা দেয়ার পরও ঋণের সুদ না কমায় কঠোর হচ্ছে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। যেসব ব্যাংক সুদ কমাতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করা হবে।
ইতোমধ্যে ব্যাংকঋণের সুদহার এক অঙ্কের ঘরে অর্থাৎ নয় শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয় বেসরকারী ব্যাংকের পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। সংগঠনটির এই ঘোষণার আগে এবার বাজেটে কর্পোরেট ট্যাক্স আড়াই শতাংশ কমানো হয়। এতে করে ব্যাংক পরিচালনা খরচ ব্যাপকহারে হ্রাস পাবে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বিএবির এ সিদ্ধান্ত মাত্র দুই একটি ব্যাংক বাস্তবায়ন করেছে। বেশির ভাগ ব্যাংক এখনও তাদের পরিচালনা পরিষদে এ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তবে চলতি সপ্তাহে বাকি ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর এই ৯ শতাংশ সুদে ব্যাংকঋণের নীতিগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটর করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
সূত্রমতে, প্রথম পর্যায়ে ব্যাংকগুলো শুধু শিল্প ঋণে ৯ শতাংশ সুদ নেবে। আর আমানতকারীদের তিন মাস মেয়াদী আমানতে সুদ দেবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। পর্যায়ক্রমে অন্য সব ক্ষেত্রে সুদহার কমানো হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান বলেন, বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্দেশে ৯ শতাংশ সুদে ব্যাংকঋণ বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। এ জন্য ইতোমধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংগুালোকে এটি বাস্তবায়নে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেসরকারী ব্যাংকগুলোকেও এটি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয়েছে।
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ব্যাংকিং খাতের খেলাপী ঋণ নিয়েই শুধু আলোচনা হয়। কিন্তু এ খাতে যে অনেক বড় অর্জন আছে সেসব বিষয়ে কেউ নজর দেয় না। আমানত সংগ্রহ, নতুন শাখা খোলা, দশ টাকায় এ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ, ঋণ বিতরণ, লভ্যাংশ প্রদান এসব ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে গত দশ বছরে ৩০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এদিকে, সুদের হার কমানোর ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে স¤প্রতি বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে ব্যাংকার্স সভা নামক ওই সভায় ডেপুটি গভর্নরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, এক অঙ্কে ঋণের সুদহার কার্যকর করতে কারও কোন দ্বিমত নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ। কয়েকটি ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের সভায় এরই মধ্যে চ‚ড়ান্ত করেছে। আর যেসব ব্যাংক এখনও চ‚ড়ান্ত করেনি তারাও চলতি সপ্তাহেই এটি চ‚ড়ান্ত করবে।
তিনি বলেন, বেসরকারী ব্যাংকগুলো এখন থেকে সরকারী আমানত পাবে ৬ শতাংশ সুদে। সরকারী ব্যাংক ও সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারী ব্যাংকে আমানত রাখতে এর বেশি সুদ দাবি করবে না। এতে ঋণের সুদ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে আর কোন বাধা থাকবে না। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনার ভিত্তিতে দেশের অর্থনীতিতে শিল্পবান্ধব পরিবেশ তৈরি, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থান বাড়াতে ও আমদানি রফতানি বাণিজ্যকে আরও গতিশীল করতে মূলত এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ২০ জুলাই ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয় বেসরকারী ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন-বিএবি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন