কয়লা সংকটের কারণে আজ সোমবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের এক মাত্র কয়লা ভিত্তিক দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগা-ওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এতে বিদ্যুৎ সংকটে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুরসহ রংপুর বিভাগের আট জেলায়।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম বলেন,কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিঃ (বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি) কর্তৃপক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায়, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলন কৃত কয়লা মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার মে: টন কয়লা ঘাটতি রয়েছে, এই কারণে গত ১৯ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মেদ কোম্পানীর সচিব (জিএম প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়া কে প্রত্যাহার করেছে খনিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পোট্রোবাংলা।একই কারণে মহাব্যবস্থাপক (মাইনিং এন্ড অপারেশন) এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী , ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর)খালেদুল কে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। যদিও খনি কর্তৃপক্ষ বলছে এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস। তাদের দাবী গত ১১ বছরে এক কোটি ১০ লাখ টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে এর মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস হয়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কারী প্রতিষ্ঠান নর্দার্ন ইলেট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিঃ নেসকো এর রংপুর জোন এর প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন, এর মধ্যে ৪০০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ আসে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে, কিন্তু কয়লা সংকটের কারণে গত এক মাস থেকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি ইউনিট বন্ধ থাকায়, সেখান থেকে মাত্র ১৫০ মেগওয়া টবিদ্যুৎ আসতো। এই কারণে গত এক মাস থেকে বিদ্যুতের কিছু ঘাটতি দেখা দিয়েছে, এখন পুরোপুরি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ায় এই ঘাটতি আরো বাড়লো। তিনি আরো বলেন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হলেও, বাহির থেকে বিদ্যুৎ এনে চাহিদা পূরণ করা হবে, তবে এতে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেই সাথে লোড শেডিংও হতে পারে।
অপরদিকে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিলে বড়রকমের লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোর মালিকরা। ফুলবাড়ী লাভলী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাঃ লিঃ এর চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি বলেন, প্রতিদিন ২ ঘন্টা বিদ্যুতের লোড শেডিং হলে প্রতিদিন ৪-৫ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে। একই কথা বলেন মির্জা গ্রুপ অব ইন্ডাঃ এর জেনারেল ম্যানেজার মশিউর রহমান। তারা আরো বলেন, ঘনঘন লোড শেডিং হলে শুধু আর্থিক ক্ষতি নয় ,মেশিনের ক্ষতিও হয়, এতে লোকসানের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিঃ এর মহা ব্যবস্থাপক এবিএম কামরুজ্জামান বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে নতুন ফেইজ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে, কয়লা উত্তোলন শুরু হলেই কয়লার এই সংকট থাকবে না বলে তিনি আশা রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন