নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা : ডিমলা উপজেলার চড়খড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন তিস্তা বাম তীর বাঁধ নির্মাণে একটি মহল নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে বাঁধটি যথাসময়ে নির্মানে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। বাঁধটি যথাসময়ে নির্মাণ না হলে আগামী বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে ওই এলাকার কয়েক হাজার পরিবার।
সূত্র মতে তিস্তা নদীর বন্যা ও ভাঙন থেকে এলাকাবাসিকে রক্ষায় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ডিমলা উপজেলার চড়খড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন ৫২৫ মিটার তিস্তা বাম তীর বাঁধ নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহŸান করেন। দু’টি প্যাকেজে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ৮৮ লাখ ১৪ হাজার ৩১৬ টাকা। বাঁধটির নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ২৮ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। সে মোতাবেক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস প্রমিজ ইন্টারপ্রাইজ স্থানীয় সংসদ সদস্য আবতাব উদ্দীন সরকারকে দিয়ে উদ্বোধন করে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এদিকে কাজ শুরুর পর থেকে ওই এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল বাঁধ নির্মাণ কাজে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারকে বাঁধের জন্য বালু, সিমেন্ট, পাথরসহ নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যেতে বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করছেন। বাধ্য হয়ে ঠিকাদারকে তাদের কাছ থেকে চড়া মূল্যে নির্মাণ সামগ্রী কিনতে হচ্ছে। এরপরেও প্রভাবশালী মহলটির একাংশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ডিজাইন প্রোফাইলের সীমানা চিহ্ন ও বাঁশের খুঁটি তুলে ফেলে নির্মাণাধীন বাঁধের উপর ঘরবাড়ীসহ জোরপূর্বক অবৈধ স্থাপনা তৈরি করছেন। এতে করে বাঁধ নির্মাণ কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে নির্মাণাধীন বাঁধটির বিভিন্ন স্থানে রাতের আধারে কে বা কাহারা দখল করে ঘর নির্মাণ করেছেন। বাঁধ সংলগ্ন স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বাঁধ নির্মাণ উপলক্ষে প্রভাবশালীরা ১৭০ জনের একটি কমিটি গঠন করেছে। তারাই বিভিন্ন গ্রæপে ভাগ হয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বাঁধ নির্মাণে নানাভাবে হয়রানি করছেন। স্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রমিজ ইন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আনারুল কবির পায়েল জানান বাঁধের ওপর ঘর নির্মাণসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কারণে যথাসময়ে বাঁধটির নির্মান কাজ সমাপ্ত করা নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, আগামী বর্ষার আগে বাঁধটির নির্মাণ কাজ শেষ করা না গেলে ডিমলা উপজেলা ও লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার কিছু অংশের কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ক্ষয়ক্ষতি হবে ব্যাপক ফসলের। তিস্তা নদীর বন্যার পানিতে বাঁধ সংলগ্ন এলাকাগুলো যেমন তলিয়ে যাবে তেমনি বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ভাঙন কবলিত হয়ে পড়বে এলাকাগুলো। এছাড়া চড়খড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পটি চরমভাবে হুমকির মুখে পড়বেন বলে তিনি জানান।
চড়খড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার ইউনুস আলী জানান গেল বছর তিস্তার বন্যায় তাদের ক্যাম্পটি হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। বাঁধটির নির্মাণ কাজ শেষ না হলে এবারও একই অবস্থা হবে বলে তিনি জানান।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুল ইসলাম বাঁধ নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ স্বীকার করে বলেন আমরা বাঁধের ওপর অবৈধভাবে ঘর নির্মাণকারী ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন