রাজধানীতে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শিশু জিহাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল হালিম এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শহিদুল ইসলাম ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এ বিষয়ে আইনজীবী আবদুল হালিম সাংবাদিকদের জানান, আপিল বিভাগ আজ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল বাতিল করে দিয়েছেন। এতে করে হাইকোর্টের ক্ষতিপূরণের রায় বহাল থাকল।
এর আগে দায়িত্বে চরম অবহেলার প্রমাণ পেয়ে জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রায় দেন হাইকোর্ট। রেলওয়ে ও ফায়ার সার্ভিসকে ১০ লাখ করে টাকা ৯০ দিনের মধ্যে জিহাদের পিতা-মাতার কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দেওয়া রায়ে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ এই রায় প্রকাশ করা হয়। রায়ে বলা হয়, হাইকোর্টের এ আদেশের পরও অন্য আইনে রেলওয়ে বা ফায়ার সার্ভিসের দায় থাকলে উক্ত দায় থেকে তাঁরা মুক্তি পাবেন না।
২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর নগরীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে মারা যায় চার বছরের শিশু জিহাদ। পরে ওই ঘটনায় সরকারি সংস্থাগুলোর দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিশুর পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। রায়ের পর রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল হালিম বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্বের অবহেলায় মারাত্মক ক্ষতি, অঙ্গহানি বা মৃত্যু হলে সরকার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। ম্যানহোলে পড়ে নিহত শিশু জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন