শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক

শিক্ষার্থী ও শ্রমিক-জনতা মুখোমুখি

রাউজান (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৮, ৭:৩৬ পিএম

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)’র শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৩ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক। নিরাপদ সড়কের জন্য ঢাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়েছে দাবী করে চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা লাঠি,লোহার রড নিয়ে গতকাল ৫ আগষ্ট, রোববার সকাল ৯টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নেয়। এই সময় শিক্ষার্থীদের সাথে শ্রমিক-জনতার ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটলেও পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে সংঘর্ষ ঘটে নি বলে জানা যায়। এই সময় পুরো এলাকা জুঁড়ে আতঙ্ক বিরাজ করে। হামলা-ভাংচুরের ভয়ে পাহাড়তলী বাজারে মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ করে রাখেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চুয়েট ক্যাম্পাসের সম্মুখে কাপ্তাই সড়কে দুইপাশে কাঠের গুড়ি ফেলে সড়কে বসে পড়ে। এই সময় প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীদের হাতে দেখাযায় লাঠি, লোহা রড ও ইস্পাতের খন্ড। লাঠিতে বাঁধা জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে উড়ায় এক শিক্ষার্থী। তার চারপাশে লাঠি হাতে শিক্ষার্থীরা শ্লোগানে কম্পিত করে চুয়েট এলাকা। শিক্ষার্থীরা পুলিশ বিরোধী অশ্লীল শ্লোগান দিতে থাকলেও রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেপায়েত উল্লাহ তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করার অনুরোধ করতে দেখা যায়। আন্দোলনরত মাহফুজ ও কৌশিক নামের সমাপনি বর্ষের দুই শিক্ষার্থী বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবীতে ঢাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে আমাদের এই আন্দোলন। তাদের আন্দোলনের কারণে জনদুর্ভোগের কথা উল্লেখ করলে তারা বলেন, যেখানে আমার ভাইয়ে রক্ত ঝড়েছে সেখানে জনদুর্ভোগ নিয়ে প্রশ্ন গ্রহণযোগ্য নয়। তারা আরো দাবী করেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সড়কে অবস্থান নিলে দূর্বৃত্তরা আমাদের উপর হামলা করার চেষ্টা করে। অপর দিকে পাহড়তলী বাজারে বিভিন্ন স্থানে হাজারখানেক শ্রমিক-জনতা অবস্থান নেয়। তাদের অনেকের হাতে লাঠি,রড দেখাযায়। তাদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিশ্চুক কয়েকজন বলেন, বিগত সময়ে বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের সময় সারাদেশ অচল থাকলেও রাউজান ছিল স্বাভাবিক। নিরাপদে গাড়ি চলাচল করেছিল। এখন চুয়েট শিক্ষার্থীদের কারণে আমরা নিরাপত্তাহীতায় ভোগছি। তারা বাজারে এসে আমাদের গাড়ি এবং দোকানে হামলা করতে পারে এই আশঙ্কায় আমারা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। এই ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চুয়েট শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখলে মোটর শ্রমিকরা পাহাড়তলীতে অবস্থান নেন। তবে কোন সংঘর্ষ হয় নি।
এইসময় আতঙ্কে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। অনেকে ৮ কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়ত করলেও বেশিরভাগ নারী-শিশু হেঁটে চলাচল করতে দেখা যায়। তখন জনদুর্ভোগের অন্ত ছিল না। তবে চুয়েট শিক্ষার্থীরা জরুরী পরিবহন, রোগী ও বিদেশ যাত্রী বহনগুলো চলাচলে সহযোগীতা করেন। পুলিশ তাদের বুঝিয়ে নিবৃত্ত করলে অবরোধের তিন ঘন্টা পর চুয়েট শিক্ষকেরা এসে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের ভিতরে নিয়ে যান।
এই ব্যাপারে রাউজান থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেপায়েত উল্লাহ বলেন, ৯টার দিকে চুয়েট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে এসে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নেয়। অপর দিকে শ্রমিক-জনতা পাহাড়তলী বাজারে অবস্থান নেয়। পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে কোন প্রকার সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করে ক্যাম্পাসের প্রবেশ করানো হয়েছে। এই ব্যাপারে চুয়েট প্রশাসন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন ধরনের সহযোগীতা পায় নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন