মানুষের জীবন বীমা নয়, যানবাহন ও শিল্প কারখানারও নয় ঢাকার ধামরাই ও আশপাশের উপজেলা অধিকাংশ গ্রামের সাধারণ কৃষকেদের আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির জন্য সমাজ ও জাতি গঠন (সজাগ) নামের একটি বেসরকারি উন্নয়নসংস্থা চালু করেছে পশু লালন পালনে গরুর স্বাস্থ্য বীমা। এ সংস্থা থেকে প্রতিটি গ্রাহক বা সদস্য গরু কেনার জন্য ঋণতো পাচ্ছেই অন্যদিকে মাত্র ২শ’ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে পাচ্ছে এক বছরের জন্য গরুর পূর্ণ চিকিৎসা। আবার কোন কারণে গরু অসুস্থ হয়ে মারা গেলে ঋণের টাকা ফেরত দিতে হচ্ছেনা। অন্যদিকে তাকে পুনরায় বেশী টাকা দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে গরু ক্রয় করার জন্য। সংস্থার পক্ষ থেকে রয়েছে গরুর জন্য স্বাস্থ্য কার্ড। গরু ক্রয়ের দিন থেকে শুরু করে বিক্রির আগ পর্যন্ত গরুর কার্ডধারীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে থাকে ওই সংস্থায় নিয়োজিত ভেটেরিনারী চিকিৎসকগন।
বিশেষ করে পবিত্র ঈদুল আযহা সামনে রেখে আর্থিকভাবে লাভবানের জন্য খামারী এমনকি গ্রামের সাধারণ কৃষক গরু মোটাতাজা করে থাকেন। ধামরাই উপজেলার প্রতিটি গ্রামেরই কোনো না কোনো বাড়িতে বহুসংখ্যক মোটাতাজা গরু রয়েছে। শেষ সময় পর্যন্ত গৃহকর্তার সাথে গৃহিনীরাও ব্যস্ত সময় পার করছে গরু লালন পালনে। সামনে রয়েছে আর মাত্র কয়েক দিন। সারাবছর সেবাযতœ করা ষাঁড় বিক্রি করতে পারলেই লাভের মুখ দেখবে কৃষক পরিবার।
সমাজ ও জাতি গঠন (সজাগ) নামের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটি শুধু অন্যকে লাভবান করার পাশাপাশি নিজের খামারেই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরী করা খাবার ও কাচা ঘাষ খাইয়ে লালন পালন করেছে ছোট বড় ৪২টি ষাঁড় গরু, জাত হলো হলি স্টাইন ফ্রিজিয়ান। এর মধ্যে একটির ওজনই হয়েছে প্রায় ৬৫৭কেজি অর্থাৎ ১৯ মন। শুধু নিজের খামারেই নয় এ সংস্থার অন্তর্ভূক্ত ৮৫০০ সদস্যের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার গরু রয়েছে। প্রতিটি গরুকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে এ সংস্থা। সংস্থার বাইরেও অনেক পরিবার সম্পূর্ণ নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ঈদের হাটে বিক্রির জন্য গরু মোটতাজা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে উপজেলার কালামপুর গ্রামে দেশি পদ্ধতিতে ঘাস খাইয়ে বিশালাকৃতির একটি ষাঁড় লালন-পালন করেছেন বিদেশ ফেরত ইয়ার হোসেন ও তার ছেলে লিটন মিয়া। ষাঁড়টির আকার ও ওজন এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। সিন্ধিক্রস জাতের এ ষাঁড়টি লম্বায় সাত ফুট চার ইঞ্চি, উচ্চতা পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি এবং বুকের বেড় আট ফুট আট ইঞ্চি। ওজন প্রায় ২০ মণ। প্রতিদিনই এ ষাঁড়টি দেখার জন্য দুর-দুরান্ত থেকে নানা বয়সী মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করছেন। আবার অনেকে ষাঁড়টির সঙ্গে তুলছে সেলফি। ফেসবুকে দেখার পরই স্থানীয় ও ঢাকার কয়েকজন পাইকার গরুটি কেনার জন্য তার বাড়িতে এসে দামও বলেছেন। কিন্তু ইয়ার হোসেনের প্রত্যাশা অনুযায়ী গরুটির দাম না হওয়ায় এখনো বিক্রি করেননি। তার আশা, ঈদ ঘনিয়ে এলেই প্রত্যাশা অনুযায়ী গরুটি বিক্রি করতে পারবেন। অপরদিকে সানোড়া ইউনিয়নের বাথুলি-ভালুম গ্রামের মোশারফ হোসেনের গৃহেও রয়েছে প্রায় ১২ মণ ওজনের ষাঁড় গরু। সেও গরুটি বিক্রির জন্য হাটে নেবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন