স্টাফ রিপোর্টার : অটিস্টিকদের জীবন মানোন্নয়নে এবং চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে রাষ্ট্রের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, অটিস্টিক শিশুরা দেশের সম্পদ। করুণা নয়, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস পালন উপলক্ষে গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিরোডিজঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা) আয়োজিত ‘অটিজম : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ আহŸান জানান।
বিএসএমএমইউ’র ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের মহাসচিব প্রফেসর ডা. এম ইকবাল আর্সলান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিএসএমএমইউ’র প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ডা. মো. রুহুল আমিন মিয়া, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইপনা’র প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ডা. শাহীন আখতার।
অটিস্টিকদের জীবন মানোন্নয়নে সরকারি ভূমিকার খÐচিত্র তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে গত ৭ বছর ধরে সরকার ব্যাপক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। গেøাবাল অটিজম পাবলিক হেলথ ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান সায়মা হোসেন ২০১২ সালে জাতিসংঘে অটিস্টিক শিশু ও তার পরিবারের সহায়তায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়ে অটিজম আক্রান্ত শিশু ও তার পরিবারের জন্য আর্থ-সামাজিক সহায়তা শীর্ষক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। যা সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। দেশে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল স্থাপন, ঢাকার মিরপুরে জাতীয় বিশেষ শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ, ৬৪ জেলায় ৬৮টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র এবং অটিজম রিসোর্স সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। দেশব্যাপী প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিকসহ সকলক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীর সমধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রæতি দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ ও বিত্তবানদের প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেন, দেশের অটিস্টিক ব্যক্তি ও শিশুরা আমাদের আপনজন। তাদের উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নয়নের মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত করতে পারলে তারাও জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। অটিস্টিকদের নিয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু আলোচনা নয়, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। কেউ কেউ অটিস্টিকদের উন্নয়নের নামে ব্যবসার দোকান সাজিয়েছেন। এমন মুনাফালোভীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
সচিব নাসিমা বেগম বলেন, অটিস্টিক ব্যক্তিদের উন্নয়নে রাষ্ট্রকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে অটিস্টিক বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার দরকার। এ বিষয়ে শিক্ষকদেরও সচেতন করে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, অটিস্টিকদের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। সেই প্রতিভা বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। মেধা বিকাশের মাধ্যমে তারাও যেন সমাজকে কিছু উপহার দিতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন