চট্টগ্রামের বাজারে মাছ ও সবজির দাম চড়া। ইলিশ মাছের সরবরাহ বাড়লেও দাম বেশি। এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১শ’ টাকায়। সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে কোরবানিতে অতি প্রয়োজনীয় মশলার দাম এবার স্থিতিশীল রয়েছে। পড়তির দিকে আদা, পিঁয়াজ, রসুনের দাম। গতকাল শুক্রবার নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজার, চৌমুহনী কর্ণফুলী বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ছুটির দিন হওয়ায় নগরীর প্রায় সব কাঁচাবাজারে ছিল মানুষের ভিড়। শাক-সবজির পাশাপাশি ক্রেতাদের কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় মশলা কিনতে দেখা গেছে।
বাজারে মাছের সরবরাহ কম। এ কারণে দাম খুব চড়া। বড় সাইজের ইলিশ মাছের কেজি সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকায় উঠেছে। ঝাটকার সমান ইলিশ বিক্রি হচ্ছে চারশ থেকে পাঁচশ টাকায়। বড় সাইজের রুই আড়াইশ টাকা, কোরাল সাড়ে পাঁচশ টাকা, পোয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিনশ টাকা। বড় রূপচাঁদা নয়শ থেকে এক হাজার টাকা, সাইজভেদে চিংড়ি এক হাজার থেকে সাড়ে পাঁচশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে হঠাৎ সবজির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই কারণে দামও বেড়ে গেছে। ৫০ থেকে ৬০ টাকার নীচে কোনো সবজি মিলছে না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়কে যানজটের কারণে সবজির গাড়ি আসতে পারছে না। একদিকে ট্রাক ভাড়া ভেড়েছে অন্যদিকে যথাসময়ে সবজির চালানও আসছে না। এতে করে সবজি ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে। এই কারণে অনেকে সবজি আনা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। নগরীর পতেঙ্গা এলাকার প্রধান সবজির আড়ত স্টিমিলে বসেছে গরুর বাজার। সেখানে সবজি আসা বন্ধ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে। ফলে পতেঙ্গা এলাকার সব হাটবাজারে সবজির সঙ্কট চলছে। গরুর গোশতের দাম কিছুটা কমেছে। হাড়সহ গোশত পাঁচশ টাকা, আর সলিড গোশত ছয়শ থেকে সাড়ে ছয়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমে ফার্মের মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। সোনালী আড়াইশ টাকা আর দেশি মুরগি চারশ থেকে ৪৫০ টাকা। ডিমের দাম এখন নিম্নমুখী। গতকাল বাজারে ডিমের ডজন ৯৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগেও ডিমের দাম ছিল ১১৩ টাকায়।
কোরবানি ঈদ উপলক্ষে মশলার বাজারে কেনাকাটা জমে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গতবারের চেয়ে এবার মশলার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি বেশি হওয়ায় এবং চোরা পথেও প্রচুর মশলা আসায় দাম কমেছে বলে জানান তারা। পিঁয়াজের দামও নিম্নমুখী হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ টাকা কমেছে। গতকাল ৩০ থেকে ৩২ টাকায় পিঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। মজুদদারি কারণে গেল সপ্তাহে হঠাৎ পিঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ঈদ সামনে রেখে মজুদদারা পণ্য ছেড়ে দেওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। আদা, রসুনের দামও কমেছে। আদা প্রতি কেজি একশ টাকা, রসুন ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মসলার মধ্যে চিকন জিরা ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা, মোটা জিরা ১৮০ থেকে দুইশ টাকা, ধনে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এলাচি প্রতি কেজি ১৬শ’ থেকে ১৯শ’ টাকা, লবঙ্গ নয়শ থেকে ১১শ’ টাকা, দারুচিনি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, তেজপাতা ৮০ থেকে একশ টাকা, গোলমরিচ কালো ৪৮০ থেকে ১২শ’ টাকা, সাদা ৭৮০ থেকে ১৬শ’ টাকা, জত্রিক ১৭শ’ টাকা, জাইফল ছয়শ টাকা। শুকনো মরিচ মিষ্টিজাতের একশ থেকে ১৬০ টাকা, ঝাল ৮০ থেকে ১৮০ টাকা, মরিচের গুড়ো মিষ্টি ১৮৫ থেকে দুইশ টাকা, ঝাল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, গোটা হলুদ ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, গুড়ো হলুদ ১৮০ থেকে দুইশ টাকা। বাজারে সয়াবিন ও সরিষাসহ সব ধরনের তেলের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন