ঈদুল আজহার ছুটিতে অগনিত পর্যটকের পদচারণায় মুখর মিনি কক্সবাজার হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত। এ সৈকতে হাজারও পর্যটকের ভিড় লেগেই আছে। দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের বিচরণে সৈকতে এখন আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে। এতে হোটেল-রিসোর্ট ছাড়াও পর্যটন খাতের সব ধরনের ব্যবসায় ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশরাও দায়িত্ব পালন করছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে সড়ক পথে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরবর্তী এ পর্যটন কেন্দ্রটি এখন সকলের নজর কেড়েছে। কক্সবাজার ও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের মতোই পর্যটকের ঢল নামছে এ সৈকতে। পারকি সৈকতের অন্যতম আকর্ষণ গভীর সমুদ্রে সারি সারি জাহাজের আলোর ঝলকানি। সূর্যাস্তের সাথে সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজের বর্ণিল আলোয় অন্যরকম আবহ সৃষ্টি হয় সৈকতজুড়ে। এমন দৃশ্য কক্সবাজারে দেখা যায় না। সরেজমিন দেখা গেছে, দূর-দূরান্ত থেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবসহ নানা বয়সী মানুষ বাস, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় যানবাহনে করে পারকি সৈকতে বেড়াতে আসছেন। কেউবা দলবেঁধে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সৈকতে পিকনিক করছেন। মহানগরী এবং জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র ও তরুণরা খোলা জীপ অথবা পিকআপে ছুটে যাচ্ছেন সেখানে। অনেকে পরিবার নিয়ে সুন্দর একটি বিকেল কাটাতে আসছেন এ সৈকতে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জমজমাট থাকছে সৈকত এলাকা। ব্যাপক পর্যটক সমাগম হওয়ায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য জমজমাট হয়ে উঠেছে।
তবে নির্দিষ্ট গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় আগত পর্যটকরা সড়কের ওপর গাড়ি পার্কিং করেছেন। এতে অনেক সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সৈকতমুখী সড়কটি সরু হওয়ায় স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। এর প্রভাবে আশপাশের সড়কে যানজট দেখা দেয়। এতে করে স্থানীয়রাও দুর্ভোগের মুখোমুখি হন। এদিকে যানজট নিরসনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ দীর্ঘক্ষণ ট্রাফিকের ভ‚মিকা পালন করতে দেখা গেছে। পারকি সৈকত এলাকায় নিরাপত্তাহীনতাও রয়েছে। প্রায়ই পর্যটকরা ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। নগর জীবনের যান্ত্রিকতা থেকে দূরে এসে সাগর পাড়ের বালিয়াড়িতে আনন্দে মেতে উঠেছে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানাভাবে সাজানো হয়েছে সৈকত এলাকা। পরিবার নিয়ে পারকি সৈকতে এসে ভাল লাগার কথা জানান অনেকে। স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম শহর থেকে মিনি কক্সবাজার খ্যাত এই সৈকতে আসার পথে লুসাই কন্যা কর্ণফুলী নদীর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য্য পর্যটকদের ব্যাপক আনন্দ দেয়।
ঢাকা থেকে স্বপরিবারে বেড়াতে আসা আসিফ নেওয়াজ জানান, কোরবানির ঈদের ছুটিতে পারকি বেড়াতে এসে খুবই আনন্দ লাগছে। এখানে না আসলে বুঝা যাবেনা এই ্র সৈকত কত সুন্দর। জেলা সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে প্রশাসনের পাশাপাশি সৈকত এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছৈয়দুল মোস্তফা ইনকিলাবকে জানান, সৈকতে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে চলাফেরা এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন