শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

যশোরে স্কুলছাত্র হত্যার আসামিকে ‘কিশোর’ বানিয়ে চিকিৎসকের প্রতিবেদন বাণিজ্য

প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর  : যশোরের মনিরামপুরের স্কুলছাত্র সাজেদুর রহমান সাহিদ হত্যাকা-ের ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ আসামি ওলিউল্লাহ ওরফে লাল্টুকে অর্থের বিনিময়ে ‘কিশোর’ বানিয়ে প্রতিবেদন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। নিহত স্কুলছাত্রের পিতা সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক অর্থের বিনিময়ে ২০ বছর বয়সী লাল্টুকে কিশোর বানিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে দেয়া এমন প্রতিবেদন বিচারিক আদালতে জমা হওয়ার পর বিষয়টি আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন। এরপরই ওই প্রতিবেদনের প্রতি আপত্তি জানানো হয়।
সূত্র জানায়, সাজেদুর রহমান সাহেদ মনিরামপুরের নেহালপুর এডাস আইডিয়াল স্কুলের ৫ম শ্রেণউর ছাত্র। ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল বিকেলে স্কুলমাঠে খেলা শেষে বাড়ি পফরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে অপহরণ করে। এরপর ১৫ এপ্রিল পাশের উপজেলা অভয়নগরের ভবদহ টেকা নদীর পাশে চমরখালী গ্রামের সন্তোষ বৈরাগীর মাছের ঘের থেকে পুলিশ তার বস্তাবন্দউ লাশ উদ্ধার করে। এরপর ১৬ এপ্রিল অভয়নগর থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। এসআই আসাদুল ইসলাম মামলার তদন্তে মনিরামপুরে পাঁচাকড়ি গ্রামের আল আমিন, ওলিউল্লাহ ওরফে লাল্টু ও আল শাহরিয়া লাল্টুর সম্পৃক্ততা পান। এই তিনজনকে গ্রেফতার ও তদন্ত শেষে গত বছর ২৮ মে যশোর আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। এরপর মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি যশোর থেকে খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচার কার্যক্রমের জন্য স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে, ওলিউল্লাহ ওরফে লাল্টু ও আল শাহরিয়া লাল্টু নামে দুই আসামিকে কিশোর দাবি করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন তাদের আইনজীবী। এর প্রেক্ষিতে প্রতিবেদন দিতে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের পরীক্ষা- নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা শেষে আল শাহরিয়া লাল্টুর বয়স ১৮ বছরের ওপরে বলা হলেও ওলিউল্লাহ ওরফে লাল্টুর বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ১৫ অথবা ১৬ বছর। আদালতে এমন প্রতিবেদন দেয়ার খবরে অবাক হন নিহতের পিতা সাইফুল ইসলাম। তিনি দুই আসামির বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কাগজপত্র সংগ্রহ করেন। সেখানে দেখা গেছে মনিরামপুরের পাঁচাকড়ি সরকারি বিদ্যালয়ে ওলিউল্লাহ ওরফে লাল্টুর জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৯৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। এ হিসেবে ‘কিশোর’ উল্লেখ করা ওলিউল্লাহ লাল্টুর বয়স ২০ বছরের বেশি। চিকিৎসকের দিকে আঙ্গুল তুলে সাইফুল ইসলাম বলেছেন, মামলা থেকে বাঁচতে আসামির লোকজন চিকিৎসককে অর্থ দিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদনের ব্যবস্থা করেছে। তিনি আগামী ১৬ মে মামলার ধার্য দিনে এ বিষয়ে আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আপত্তি জানাবেন। তবে এই প্রতিবেদন প্রদানকারী চিকিৎসক অফিসার আলমগীর কবির দাবি করেছেন, আমি একা নই, কয়েকজন মিলে প্রতিদিন অনেক প্রতিবেদন তৈরি করেন। ভুল হলেও হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। এটি দেখতে হবে। তবে কোনো অর্থ লেনদেনে প্রতিবেদন দেয়া হয় না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন