সাতক্ষীরার একাধিক চোরাকারবারী, হুন্ডি ব্যবসায়ী ও মুদ্রা পাচারকারীসহ ৩৯ জনের ব্যাংক একাউন্ট তদন্তে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের তিন সদস্যের একটি দল ইতোমধ্যে সাতক্ষীরায় পৌঁছেছেন। এরা হলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক গাজী মনিরউদ্দিন, উপ-পরিচালক সালেহ উদ্দিন এবং অর্থ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব ড. এম ডি বাশিরুল আলম। দলটি ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় তদন্ত শুরু করেছে। চোরাকারবারী, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের হিসাব রয়েছে এ শাখায়। বাকীদের অন্যান্য শাখায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩ সদস্যের এ দলটি সাতক্ষীরার তালিকাভুক্ত ৩৯ জন ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব নাম্বার তদন্ত করবেন বলে জানা গেছে। যাদের ব্যাংক একাউন্ট তদন্ত হচ্ছে তাদের ব্যাংকিং লেনদেন অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক বলে সূত্র জানিয়েছে।
সাতক্ষীরার যেসব ব্যবসায়ীর ব্যাংক একাউন্ট তদন্ত শুরু হয়েছে তারা হলেন, ২০১৮ সালের ও ২০১৪ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভূক্ত অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী, হুন্ডি ব্যবসায়ী ও মুদ্রা পাচারকারী, বিগত ওয়ান ইলেভেনে গ্রেফতার ও মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আল ফেরদৌস আলফা, ভোমরা ইউপি চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু, বৈকারী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আসাদুজ্জামান অসলে, কলারোয়ার সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা গোলাম মোর্শেদ, সাতক্ষীরা জেলা শহরের খান মার্কেটের অংকন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী গৌর দত্ত, অমিত জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী জয়দেব দত্ত, তালার কুমিরার আদিত্য মজুমদার, ব্রাদার্স জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী আশুতোষ দে, জনপ্রিয় জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী সুমন কর্মকার ও বাবু কর্মকার, শ্যামনগরের নকীপুরের বিশ্বজিৎ মন্ডল, শ্রী জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী দীন বন্ধু মিত্র, ঝাউডাঙ্গার এম ভি জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী মুকুন্দ ভারতী, ঝাউডাঙ্গার সাগর জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী রবিন্দ্র নাথ দে, আশাশুনির নিউ দে জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী দেব কুমার দে, কলারোয়ার সন্ধ্যা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী হরেন্দ্র নাথ রায়, আধুনিক জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী গোপাল চন্দ্র দে, তালার দীপা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী গনেশ চন্দ্র শীল, তালার নিউ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী বাসুদেব দত্ত, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারীর মো: রাশেদুল ইসলাম, পদ্মশাখরার মো: লিয়াকত হোসেন, ঘোনার মো: হাবিবুর রহমান, কলারোয়ার বলিয়ানপুরের জালালউদ্দিন গাজী, কলারোয়ার চন্দ্রনপুরের নাসির, একই উপজেলার কাকডাঙ্গার ইয়ার আলী মেম্বার, সাতক্ষীরা জেলা শহরের রয়েল স্যানিটারীর স্বত্বাধিকারী মো: নজরুল ইসলাম, ভোমরার এ এস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আজিজুল ইসলাম, বাঁকালের ফিরোজ ইন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী ফিরোজ হোসেন, বাঁকালের কে হাসান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী খালিদ কামাল, ভোমরার মামা-ভাগ্নে ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আজহারুল ইসলাম, মেসার্স সাব্বির ইন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী শাহানুর ইসলাম শাহিন, মেসার্স নাজিম ইন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী গোলাম ফারুক বাবু, মেসার্স রিজু এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী আবু মুসাসহ ৩৯ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাতক্ষীরার একাধিক ব্যাংক ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ৩৯ জনের এ তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের ব্যাংক লেনদেন অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক বলে সূত্র জানায়। এসব ব্যবসায়ীর ব্যাংকের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা আরো জানান, ৩ সেপ্টম্বর সোমবার ২০১৮ থেকেই তদন্ত কাজ শুরু করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। শীর্ষ চোরাকারবারী হুন্ডি ব্যবসায়ীসহ ৩৯ জন ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব তদন্ত শুরু হওয়ায় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ভীষন ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন