শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

জ্বীনের বাদশাহখ্যাত লাকির তেলেসমাতি

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চন্দ্রপুরে জ্বীনের হাজিরা দেয়ার কথা বলে লাকি বেগম (৩৬) এর বিরুদ্ধে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এলাকাবাসী। সম্প্রতি বিক্ষুদ্ধ জনতা কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
অপরদিকে প্রতারক জ্বীনের বাদশাহ লাকি বেগমকে লাইসেন্স দেয়ার নামে স্থানীয় সাবেক ইউপি মেম্বার নুরুল আমিন ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতারক লাকি বেগমের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত হাসান মিয়ার মা ফাতেমা বেগম জ্বীন হাজিরার কাজ করতো। দুই বছর আগে তিনি মারা যাওয়ার পর পুত্রবধূ লাকি বেগম উত্তরাধিকারসূত্রে জ্বীন হাজির করার কাজ করতে থাকে। এর মাধ্যমে লাকি বেগম স্বামী-স্ত্রীর অমিল, জ্বীনের আছর তাড়ানো, সাপে কাটার ঔষধ প্রদান, শিশুদের দুধ লওয়া, সন্তান না হওয়া ও পাতলা পায়খানা বন্ধসহ বিভিন্ন জটিল রোগের সমাধান করে বলে দাবি করে আসছিল। কতিপয় দালালদের মাধ্যমে দূর-দূরান্তের নারী-পুরুষরা তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিতো। বিভিন্ন দেশ থেকে ও অপরিচিত ওষুধ আনার কথা বলে তিনি নারী-পুরুষদের থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন। বিনিময়ে দালালদের কিছু কমিশন দিতেন।
লাকি বেগমের প্রতারণার শিকার হওয়া চন্দ্রপুর গ্রামের এক যুবক জানান, জ্বীন হাজিরের মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করার কথা থাকলেও তিনি জ্বীন হাজির করতে পারেন না। তার দেয়া তাবিজে আরবি কোন লেখার পরিবর্তে শুধু ইংরেজী ডবিøউ শব্দটিই দেখা যায়। কঠিনভাবে পেঁচানো হওয়ায় এসব তাবিজ আরবি নাকি ইংরেজি তা বুঝে উঠতে পারে না ভুক্তভোগী এবং সাধারণ মানুষ। স্থানীয় সাবেক ইউপি মেম্বার নুরুল আমিন সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন, জ্বীনের বাদশাহখ্যাত লাকি বেগমের এসব কাজে গ্রামবাসী শুরু থেকেই বাধা প্রয়োগ করে আসছে। বিগত ১ মাস পূর্বে সামাজিক বিচারের মাধ্যমেই তার এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা এবং বিভিন্ন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সামাজিক বিচারের পাশাপাশি গ্রামের যুব সমাজও শক্ত অবস্থান নেয়। তারা এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক জনমত গঠন করে। ফেস্টুন ও ব্যানারের মাধ্যমে গ্রামের সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলে। এর ফলে লাকি বেগমের প্রতারণার তৎপরতা আরও কমে যায়।
এ ব্যাপারে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি দীপন দেবনাথ বলেন, আমি বিষয়টি এইমাত্র শুনেছি। খোঁজ নিয়ে লাকি বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন