শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

যমুনা সারকারখানায় ফাঁকি কোটি টাকার বাসাভাড়া

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা: | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

দেশের সর্ববৃহৎ ও একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) বছরে কোটি টাকার উপরে বাসা ভাড়া বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। পরিবারসহ বসবাসের জন্য নির্ধারিত আবাসিক ভবন থাকলেও তা ব্যবহার না করে কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে অসাধু কর্মকর্তারা টাকা বাঁচাতে বছরের পর বছর ব্যাচেলর ভবন ব্যবহার করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জেএফসিএল সুত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প কারখানা কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন যমুনা সার কারখানা কেপিআই-১ এটি একটি মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। এখানে কর্মরত কর্মকর্তাদের বসবাসের জন্য সার্বক্ষনিক কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। বিবাহিতদের পরিবার নিয়ে বসবাসের জন্য বেশ কয়েকটি নির্ধারিত ভবনের পাশাপাশি একটি ব্যাচেলর ভবনও রয়েছে। আবাসিক বাসভবনগুলোতে পরিবারসহ বসবাসের জন্য মূল বেতনের ৪০ শতাংশ বাসা ভাড়া গুনতে হয় কর্মকর্তাদের। আর ব্যাচেলর ভবনে দিতে হয় মাত্র পাঁচ শতাংশ। মাসিক ভাড়ার অনেকগুলো টাকা বাঁচাতে কারখানা প্রশাসনের যোগসাজশে অসাধু কর্মকর্তারা নির্ধারিত ভবন ছেড়ে ব্যাচেলর ভবনকেই বেছে নিয়েছেন। অথচ ফ্যামেলি কোয়ার্টারের (ডি-টাইপ ভবন) ৫২টি বাসা খালি পড়ে রয়েছে। যার প্রতিটি সর্বনি¤œ ১৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক ভাড়া আদায় হতো। তা না হওয়ায় সরকার প্রতিবছর বঞ্চিত হচ্ছে কোটি টাকার উপর রাজস্ব থেকে। দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রকাশ্য এ অনিয়ম দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাচেলর ভবনের নিচতলার অতিথি কক্ষটি তিন বছর ধরে সস্ত্রীক দখল করে আছেন কারখানার নির্মাণ কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ। তার মাসিক ভাড়া মাত্র এক হাজার টাকা দিতে হয়। এ ব্যাপারে আব্দুল মজিদ জানান, ‘স্ত্রী নিয়ে বসবাস করলেও কর্তৃপক্ষ তাকে ব্যাচেলর হিসেবেই রুম বরাদ্দ দিয়েছে। ইতোপূর্বে তিনি ডি-টাইপ ভবনে মাসিক ১২ হাজার টাকায় বসবাস করতেন, খরচ বাঁচাতেই তিনি এখানে উঠেছেন।’ চতুর্থতলায় গিয়ে জানা যায়, একাউন্টস বিভাগের কর্মকর্তা সৈয়দ এরশাদ বিন ইকবাল ৪০৯ নম্বর বাসায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে টানা আট বছর ধরে বসবাস করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিয়ে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়েছে থাকি, আর কিছু বলতে পারবো না।’ পুরো ব্যাচেলর ভবন ঘুরে দেখা গেছে, নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা সাজেদুল কবীর (বাসা নম্বর ৪০২), ইউটিলিটি বিভাগের নাসির উদ্দিন (৪০৪), মোজাম্মেল হক (৪০৭), ইউরিয়া প্লান্টের নিজাম উদ্দিন (৪১৭), সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মুখলেছুর রহমান (৪১৯), রাশেদুল ইসলাম (৪২০), একাউন্টসের রফিকুল ইসলাম (৩০৫), ইউরিয়ার শাহাদাত হোসেন (৩১০), অ্যামোনিয়া প্লান্টের অর্জুন কুমার রায় (৩১৮), উপ-সহকারী প্রকৌশলী খন্দকার বাশিউল হক (১০২), ইউটিলিটির মশিউর রহমান (১০৪), ব্যাগিংয়ের সালাউদ্দিন (১০৫) ও ফজলুল হকসহ (১০৯) অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা অবৈধভাবে ব্যাচেলর বাসায় বসবাস করছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন