নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২১নং দক্ষিণবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও ঝুঁকি নিয়ে অফিসে বসেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে বারান্দায় ক্লাস নেন শিক্ষকরা অন্যদিকে বৃষ্টি এলে বাধ্য হয়ে প্রাণনাশের ভয় নিয়ে ক্লাস করেন ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। তবে ভেতরে ক্লাস করতে অনীহা রয়েছে শিক্ষার্থীদের। তাই ভবনের ব্যবস্থা না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবক মহলে। তাদের সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে এ বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২১নং দক্ষিনবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির বাইরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট। দেয়ালে রং দিয়ে জীর্ণতা ঢেকে দিলেও ১৯৯১ইং সনে নির্মিত ৩ কক্ষের একটি টিনসেড ভবনের ইটের দেয়াল পেছন দিকে থেকে বিগত ৩ বছর ধরে ফাটল ধরেছে। এ ফাটল মেরামত না করায় দেয়াল ও পিলারসহ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফাটল ধরার ফলে ওই ভবনের পাকা মেঝে থেকে দেয়াল আলাদা হয়ে হেলে পড়লেও উপযুক্ত শ্রেণি কক্ষ না থাকায় বাধ্য হয়ে শিক্ষক মিলনায়তনসহ ও দুটি শ্রেণি কক্ষে পাঠদান চলছে। তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আপত্তি থাকায় বারান্দায়ও পাঠদান করতে দেখা গেছে।
সরেজমিন আরো দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে ২৫০জন শিক্ষার্থীর জন্য ৬জন শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত। ২০০৮ সালে ২ কক্ষের অপর একটি ভবন নির্মাণ করলেও দুকক্ষে উক্ত সংখ্যক শিক্ষার্থীদের সংকুলান হচ্ছে না। এতে বিপাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষ। বৃষ্টি ও ঝড়ের সময় দুকক্ষের নতুন ভবনে সকলকে আশ্রয় নিতে হয়। এছাড়া বাকি সময় বারান্দায় পাঠদান করে কোনমতে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম। স্থানীয়দের দাবী অবিলম্বে নতুন ভবন করে নিরাপদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরকারী শিক্ষা নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা।
শিক্ষার্থী সাফিয়া আক্তার জানায়, তার পিতার অর্থকরি কম থাকায় এ বিদ্যালয়ে পড়ান। তবে ভবন ফাটল দেয়ায় ভয় নিয়ে ক্লাস করতে হয়। এ জন্য বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ে আসতে দেননা তার বাবা মা।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিকান্ত সরকার দীপক বলেন, বিদ্যালয়টিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থাকায় শিক্ষার্থী সঙ্কট রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এব্যপারে এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতিক এর দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. কবীর হোসেন ভুইয়া বলেন, ভবন সঙ্কট বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আবেদন করেছি। রং দেয়া ছাড়া কোন সুরাহা পাইনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদা আখতার বলেন, দক্ষিনবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন সঙ্কট বিষয়ে জেনেছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন মহলকে জানিয়ে ভবনের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন