শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

উপকূলীয় এলাকার বাজেট বৃদ্ধির সুপারিশ

প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন জাতীয় বাজেট উপলক্ষে উপকূলীয় এলাকার ভূমি ও এর অধিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আলাদা বিশেষ প্রতিষ্ঠান তৈরি করা এবং বিশেষ অবকাঠামো নির্মাণে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ (ইক্যুইটিবিডি) আয়োজিত ‘প্রাক বাজেট ক্যাম্পেইন ২০১৬-১৭ : প্যারিস সম্মেলন পরবর্তী প্রভাব ও অভিযোজন অর্থায়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচিসমূহ : উপকূলীয় ভূমি ও জনগোষ্ঠী রক্ষায় বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে’ শীর্ষক সেমিনারে এসব সুপারিশ উঠে আসে।
সেন্টার ফর গ্লোবাল চেঞ্জের ড. আহসান উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন। ইক্যুইটিবিডির রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একই সংস্থার সৈয়দ আমিনুল হক। এতে আরো বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য টিপু সুলতান, সংসদ সদস্য একে এম শাহাজাহান কামাল, সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের ডা. আব্দুল মতিন, ক্যাম্পেইন ফর সাসটেইনবেল রুরাল লাইভলিহুডের শারমিন্দ নিলর্মি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের জাকির হোসেন খান, ডেভেলপমন্টে পার্টনারশিপের জাহাঙ্গির হোসেন মাসুম, সিসিডিবি’র ড. খালিদ হোসেন, সিপিআরডির শামসুদ্দোহা ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় সৈয়দ আমিনুল হক বলেন, গড় জাতীয় আয় বেড়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে নানা মাত্রার ঝুঁকি আমাদের জীবনে সম্পৃক্ত হয়েছে তাই দারিদ্রের সংজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করতে হবে, যেমনটা ভারত সম্প্রতি করেছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকলল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে এই ধরনের ঝুঁকিগুলো বিবেচনা না করেই, একইভাবে জলবায়ু অভিযোজনকেও বিভিন্ন খাতভিত্তিক পরিকল্পনায় তেমনভাবে সম্পৃক্ত করা হয়নি।
জাতীয় কোষাগার থেকে উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল বরং এক্ষেত্রে সরকার বিশ্ব ব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো বিভিন্ন সংস্থার ঋণের উপর নির্ভর করছে। অ্যাডভোকেট টিপু সুলতান, একে এম শাহাজাহান কামাল, মীর মোস্তাক আহমেদ- এই তিনজন সংসদ সদস্যই উপকূলীয় এলাকার মানুষকে রক্ষা করার জন্য চর বোর্ড বা উপকূলীয় বোর্ড ধরনের স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন মাসুম উপকূলীয় এলাকার ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ জোন জোন ভিত্তিক পরিকল্পনা করার দাবি করেন। সিপিআরডির শামসুদ্দোহা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুতদের বিষয়টি শুধু মানবাধিকারের দৃষ্টিতে না দেখে ন্যায় বিচারের দৃষ্টিতেও দেখতে হবে।
সিসিডিবির ড. খালিদ হোসেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ইতোমধ্যে যেসব কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের দাবি করেন। ড. আব্দুল মতিন বিদেশি পরামর্শকেদের দ্বারা বিশেষ ডেল্টা পরিকল্পনা প্রণয়নের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন, তিনি উলেখ করেন যে, আন্তঃসীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি না করে এই ধরনের ডেল্টা পরিকলপনা গ্রহণ করা হলে তা অকার্যকর হতে বাধ্য। জাকির হোসেন খান বলেন, দুইটি জলবায়ু তহবিলের অভিজ্ঞতার আলোকে সরকারকে এ ধরনের সকল তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এক্ষেত্রে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়াটা কঠিন হয়ে যাবে।
শারমিন্দ নিলমি বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সংস্কার করতে হবে এবং এর বিভিন্ন প্রবল্প পরিবল্পনায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেতে হবে।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বাঁধ ছাড়া উপকূলীয় মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ আসবে না এবং তারা এলাকা থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাইবে। ড. আহসান উদ্দিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং এর পাশাপাশি জলবায়ু কর্মকৌশল পরিকল্পনাকেও হালনাগাদ করতে হবে। জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনায় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতার কারণ খতিয়ে দেখার দাবি করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন