অর্থনৈতিক রিপোর্টার : লেনদেনে গতি ফিরছে না দেশের শেয়ারবাজারে। লেনদেনে গতি না ফেরায় বাজারে শেয়ারের চাহিদাও বাড়ছে না। ফলে মন্দার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাজার। গতকাল রোববার চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আর্থিক লেনদেন হয়েছে ৩০৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। গত প্রায় এক মাসের মধ্যে এটিই ডিএসইর সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে গত ২৯ মার্চ ডিএসইতে সর্বনিম্ন ৩০৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। রোববার প্রায় ১১০ কোটি টাকা কম লেনদেন হয়েছে। লেনদেন কমার এ হার ২৬ শতাংশেরও বেশি। সম্প্রতি দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দৈনিক আর্থিক লেনদেন ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচেও লেনদেন হচ্ছে। অথচ বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাজারের গভীরতা অনুযায়ি অন্তত দৈনিক ৮০০ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হওয়া উচিত। সে হিসাবে অর্ধেকেরও কম লেনদেন হচ্ছে বাজারে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘ মন্দার কারণে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা লোকসানের মুখে পড়েছে। ফলে বাজারে অংশগ্রহণ কমে গেছে। নতুন করে বিনিয়োগেও কেউ আগ্রহী হচ্ছে না। ফলে বাজারে লেনদেন একটা নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। নতুন ফান্ড বাজারে না আসলে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সহজ হবে না।
এদিকে রোববার আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি সূচক কমেছে। তবে পতনের এ হার হচ্ছে সামান্য। ২ দশমিক ০৯ পয়েন্ট কমে দিনশেষে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩৩৮ দশমিক ২৪ পয়েন্ট। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় দিনের শুরুতে সূচক হারাতে থাকে বাজার। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় পতনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০ পয়েন্টের বেশি সূচক হারায় বাজার। শেষ দুই ঘণ্টায় ঘুরে দাঁড়ালে বড় ধরনের পতন থেকে রক্ষা পায় বাজার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৭টি ইস্যুর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩২টির, কমেছে ১৪৩টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২টির দর। লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে মবিল যমুনা। এ কোম্পানির ১৬ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ারের ১০ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৬০ লাখ ৯২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইবনে সিনা। লেনদেনে এরপর রয়েছে-ডরিন পাওয়ার, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, খুলনা পাওয়ার, এসিআই, বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, কেয়া কসমেটিকস।
অন্যদিকে এদিন সিএসইতে মোট শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ ১৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ২৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার। সুতরাং এক কার্যদিবসের ব্যবধানে সিএসইতে শেয়ার লেনেদেন কমেছে ৪ কোটি ১৭ লাখ টাকার বেশি।
এদিন সিএসইতে প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ২৪ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ১০৬ পয়েন্টে, সিএএসপিআই সূচক ৪০ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৩৪১ পয়েন্টে, সিএসই-৫০ সূচক ৩ দশমিক ২৯ পয়েন্ট কমে ৯৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে সিএসই-৩০ সূচক ২০ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ১২ হাজার ২৭৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ১০২টির এবং কোনও পরিবর্তন হয়নি ৩৯টি কোম্পানির শেয়ার দর। টাকার অঙ্কে এদিন সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো- স্কয়ার ফার্মা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড পাওয়ার, ডোরিন পাওয়ার, বার্জার পেইন্ট, মবিল যমুনা, বিএসআরএম লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স এবং কেয়া কসমেটিকস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন