শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অবরুদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৯:০০ পিএম

নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং দ্রুত নিয়োগের দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে চাকরি প্রতাশী চিকিৎসকরা। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে চাকরি প্রার্থীরা মিছিল সহকারে ভিসির কার্যলয়ে যায় এবং প্রো-ভিসি ডা. সাহানা আখতার রহমানকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। সর্বশেষ খবর (রাত ৮টা ২৫ মিনিট ) পর্যন্ত প্রো-ভিসি, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতনরা অবরুদ্ধ আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সুত্র জানায়, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগীতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে বুধবার বেলা ১২টা থেকে প্রায় চার শতাধিক চাকরি প্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। পরে মিছিল সহকারে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে বিক্ষুব্ধরা। এক পর্যায়ে বেলা ২টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্লকে ভিসি’র কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়–য়া তার কার্যলয়ে না থাকায় প্রো-ভিসি ডা. সাহানা আখতার রহমানের কার্যালয় অবরুদ্ধ করে। সূত্র জানায়, দুপুর ২টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুদ্ধ চিকিৎসকরা।
জানতে চাইলে ডা. সাহানা আখতার রহমান মন্তব্য প্রকাশে অনিহা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলবো না। যা বলার ভিসি স্যার বলবেন’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়–য়া বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত রাউন্ড শেষ করে বুধবার দুপুরে বিসিপিএস’র উদ্দেশ্যে রাওনা করি। গাড়ি মগবাজার ফ্লাইওভারের ওপর ওঠার পর খবর পাই চাকরি প্রার্থীরা প্রশাসন ভবনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে এবং প্রো-ভিসির কক্ষ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় বিকেল চারটায়। এরপর রাত ৮টায় ভিসি’র সাথে একাধিকবার কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল নম্বর ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ভিসি’র ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, তখনো প্রো-ভিসি ডা. সাহানা এবং ভিসি, প্রো-ভিসির অফিসের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ আছেন। তবে ভিসি ওখানেই নেই। ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বলেন, প্রো-ভিসির কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা আছেন। তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি অল্প সময়ে তারা বেরিয়ে আসবেন।
বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের কয়েকজন বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু নিয়োগ হলেও সেগুলো অনিয়তান্ত্রিক ভাবে তদবিরের মাধ্যমে হয়েছে। তাই ২০১৬ সাল থেকে নতুনদের নিয়োগের জন্য দাবি জানানো হচ্ছে। এরপর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করা ছাত্রলীগের শিক্ষার্থীরা তৎকালী ভিসি ডা. কামরুল হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসক নিয়োগে অনুরোধ জানায়। এমনকি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তাকে কয়েক ঘন্ট অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে তিনি চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন। ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাচিপের চাকরি প্রত্যাশি জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে ডা. কামরুলের আলোচনা হয়। এ সময় তিনি তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুসারে দু’শ চিকিৎসক নিয়োগের পূর্বসিদ্ধান্ত রয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। এরপর ২০১৭’র অক্টোবর মাসের ১ তারিখে ২০০ জন মেডিকেল অফিসার চেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে মেডিকেল অফিসার পদে ১৮০ জন এবং মেডিকেল অফিসার (ডেন্টাল সার্জারী) পদে ২০ জনকে নিয়োগের বিষয় উল্লেখ করা হয়। চলতি মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ২৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগীত করে কর্তৃপক্ষ। তাই আমরা বিক্ষোভ করছি। এখন প্রো-ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নিয়োগের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।
পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়েল প্রক্টর প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ বলেন, ম্যাডাম অবরুদ্ধ রয়েছেন। আমরা ম্যাডোমের সঙ্গে আছি। যারা অবরুদ্ধ করেছে তারাও চিকিৎসক, আমাদের ছাত্র। আমার তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। আশাকরছি তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পারবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন