শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজে শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত

প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ছাগলনাইয়া উপজেলা সংবাদদাতা : ফেনীতে উচ্চ শিক্ষা প্রসারে ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজের একটি গুরুত্বপুণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু কলেজটি এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন কোন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়রা জানান, উপজেলায় উচ্চ শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ছাগলনাইয়ার প্রাণ কেন্দ্রে এ ডিগ্রী কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৯৮৮ সালে কলেজটি সরকারি করণ করা হয়। কয়েক দশক এ কলেজটি উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। মাঝে মধ্যে বরাদ্দ এলেও অবকাঠামোগত উন্নয়ন তেমন হয়নি। সঙ্গে শিক্ষক সংকট, প্রযুক্তি স্বল্পতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা বেড়েই চলছে। পাঠদানের পরিবেশও বিঘিœত হচ্ছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, কলেজে বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক পাঠদানের জন্য ২১ জন শিক্ষকের পদ বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু ৯জন শিক্ষকের পদশূণ্য দীর্ঘদিন ধরে। ফলে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সরকার দেশকে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর করে তোলার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোয় আইসিটি বিষয়ে ও কম্পিউটার বিষয়ে বাধ্যতামূলক করেছে বলে জানায়। কিন্তু কলেজে এ বিষয়ে কোন শিক্ষক নেই। কম্পিউটারও নেই। তারা আরো জানান, শ্রেণি কক্ষে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক আলো পাখার ব্যবস্থা নেই। ফলে গ্রীষ্মে গরম ও বর্ষায় কক্ষ গুলোয় স্বল্প আলো থাকে। পাঠদানের জন্য এ পরিবেশ সমস্যাজনক। কলেজের শৌচাগার রয়েছে, কিন্তু তার দরজা ভাঙ্গা ও অপরিচ্ছন্ন। ফলে ছাত্রীদের ভোগান্তীতে পড়তে হয়। রয়েছে একটি পাঠাগার। কিন্তু বিষয় ভিত্তিক পর্যাপ্ত বই নেই। তত্ত্বাবধানের অভাবে তা শিক্ষার্থীদের কোন কাজে আসছেনা। কলেজের একটি বিশাল মাঠ রয়েছে। বর্ষায় সেখানে হাঁটু পরিমান পানি জমে থাকে। আর শীতকালে গো-চারণ ভূমিতে পরিনত হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা বা অন্য কোন কর্মসূচি পালনে মাঠটি ব্যবহার করতে পারেনা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইভটিজিং। অনেক ছাত্রীই তার শিকার। অনেকেই এ কারণে কলেজ ছেড়েছেন। ফলে এক সময় উপজেলা মেধাবী শিক্ষার্থীরা এ কলেজটিতে ভর্তি হলেও এখন তার চিত্র বদলে গেছে। দাউদ নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা অধ্যক্ষ স্যারের কাছে শ্রেণি কক্ষে কয়েকবার বৈদ্যুতিক পাখার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। গ্রীষ্মকালে উত্তপ্ত আবহাওয়ার কারণে শ্রেণি কক্ষে বসা সম্বব হয়না। হারুন অর রশিদ নামের এক অভিভাবক বলে আমার ছেলে এসএসসি পাসের পর এ কলেজেই ভর্তি করাই। এক সময় উপজেলা কলেজটি সুনামের সঙ্গে শিক্ষার আলো বিস্তার করেছে। কিন্তু এখন সে অবস্থায় নেই। শিক্ষক সমস্যা, শ্রেণি কক্ষের অভাব ও মান সম্মত শিক্ষকের অভাবের কারণে গতকাল রোববার সকালে ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জরুরি এক সংবাদ সম্মেলন ঢেকে তা থেকে উত্তোরনের জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আবু হানিফ জানান, ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজে ২ হাজার ১৪৮ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। ২১টি সৃষ্ট পদের বিপরীতে কর্মরত শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৯ জন। তম্মধ্যে বাংলা ৩ পদে ১ জন, ইংরেজি ২টি পদে ১ জন, অর্থনীতির ২টি পদে ২টি শূন্য, ইসলামী ইতিহাসের ২টি পদে ২টি শূন্য, দর্শনের ২টি পদের ১টি শূন্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ২টি পদের ১টি শূন্য, ব্যবস্থাপনা ২টি পদের ১টি শূন্য, হিসাব বিজ্ঞানের ২টি পদের ২টি শূন্য রয়েছে। উক্ত কলেজে ভবন রয়েছে মাত্র ৩টি, শ্রেণি সংখ্যা ১১টি, মাল্টিমিডিয়া কক্ষ ১টি, আইসিটি ল্যাব ১টি ও বিজ্ঞান ল্যাব ১টি রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষক ও সিনিয়র শিক্ষক পদায়ণ ও শ্রেণী কক্ষ নির্মাণ করা না হলে পাঠ দান অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন