ফলের দেশ-বাংলাদেশ। আমাদের দেশে প্রায় ৭০ রকমের ফল জন্মে। দেশি ফলগুলো রঙে রসে, স্বাদে অনন্য। এমনি একটি ফল চালতা। বাংলা নাম চালতা হলেও ইংরেজি নাম ওহফরধহ ফবষষবহরধ বৈজ্ঞানিক নাম-উবষষবহরধ রহফরপধ । আমরা যারা গ্রামে কিংবা শহরে বসবাস করি সকলেরই অতি পরিচিত একটি ফল চালতা। অনেকের কাছে এর আচার খুবই পছন্দনীয়। এ ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে। চালতাকে লিভার এবং হার্টের টনিক হিসেবে মনে করা হয়। চালতায় ক্যালসিয়াম ও শর্করা বিদ্যমান । এছাড়া এর ডায়াবেটিক প্রতিরোধক ক্ষমতাও রয়েছে।
চালতা প্রাকৃতিক এসিড যেমন-অক্সালিকম, ট্যানিক, ম্যালিক এবং সাইট্রিক এসিডে সমৃদ্ধ। এটা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ও ভিটামিন-এ, বি ও সি এর ভালো উৎস। চালতার পাতাস্থ তেল ত্বকের সংকোচনে এবং এর আঠা ত্বকের ক্ষতজনিত যন্ত্রণা প্রশমিত করতে ব্যবহৃত হয়। চালতা যেকোনো ধরনের বদহজমজনিত সমস্যার জন্য ভালো। এটি অন্ত্রের সংক্রমণ, অর্শরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া নিরাময়ে সাহায্য করে। এছাড়া চালতা বাচ্চাদের পেটের সমস্যায়ও ব্যবহার করা হয়।
এটি মহিলাদের জন্য উপকারী। কারো কারো মতে, চালতা গর্ভপাত পরবর্তী সমস্রাগুলো প্রতিরোধে সহায়তা করে। এমনকি এটি জরায়ু ও স্তনের ক্যান্সার পর্যন্ত প্রতিরোধ করে। পুরুষের অকাল বীর্যস্খলন, দুর্বলতা ও শুক্রাণুর স্বল্পতা নিরাময়ে চালতা উপকারী ভূমিকা রাখে। চালতা ভিটামিন এ ও সি পূর্ণ একটি ফল: তাই স্কার্ভি ও লিভারের সমস্যার জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। রক্ত পরিশোধন ও ডিটক্সিফিকেশনে চালতা সহায়তা করে। এছাড়া যাদের কিডনিতে সমস্যা রযেছে, তারা নিয়মিত চালতা খেলে উপকার পাবেন।
চালতার পাতা ঠান্ডা ও কাশির জন্য উপকারী। চালতা গাছের কষ বা আঠায় ডায়াবেটিস রোগ নিরাময়ের উপাদান রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম চালতায় ১৪০ কিলোক্যালরি শক্তি আছে, যা কিনা শক্তিবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
বিভিন্ন রোগে চালতার ব্যবহার: ডায়রিয়া বা পাইলসের জন্য চালতার কোমল মাংস ভর্তা করে বীজ ছাড়িয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। হজমের গোলযোগজনিত সমস্যায় চালতার কোমল মাংসের সঙ্গে এলাচি, জিরা এবং মধু মিশিয়ে খেলে উপকার হবে। বাচ্চাদের পেটের সমস্যা চালতা পাতার রস, মধু ও চিনি মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এছাড়াও কচি ফল পেটের গ্যাস, কফ, বাত ও পিত্তনাশক। পাকা ফলের রস চিনিসহ পান করলে সর্দিজ্বর উপশম হয়।
চিকিৎসক-কলামিষ্ট
মোবা: ০১৭১৬২৭০১২০
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন