কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় পৌছে যেতেন বিজেন্দ্র রানা। রাতের শেষ প্রহরে রাস্তাও খালি ছিল। গাড়ি পার্ক করার জন্য সামনের খালি জায়গায় দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল। এমন সময় বেখেয়ালে আস্তে ধাক্কা মেরে বসলেন রাস্তার পাশে দাড়িয়ে কথা বলতে থাকা প্রতিবেশীদের এক ল্যাব্রাডর জাতের কুকুরের গায়ে। তেড়ে এসে কুকুরটি তার দিকে ঘেউ ঘেউ করতে থাকল। কিছুক্ষণ পরে দুই সন্তানের জনক ৪০ বছরের রানাকে পড়ে থাকতে দেখা গেল নিজের রক্তে তৈরি পুকুরের মধ্যে। টমি নামের সেই কুকুরটির কাছে মাফ না চাওয়ায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত ছুরি ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে ৬ বার আঘাত করা হয়েছিল।
দিল্লির এই সামান্য ব্যাপারে ঘটে যাওয়া ঘটনায় এক কর্মজীবি সদস্যকে হারিয়ে আর এক কর্মজীবি সদস্য দিন দয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে থাকায় ১০জনের পরিবারটিকে কঠিন দূর্ভোগের মধ্যে পড়তে হলো। বিজেন্দ্রর কান্না শুনে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা বড় ভাই রাজেশ রানাকেও (৪৫) তিনবার ছুরিকাঘাত করা হয়।
এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার মধ্যরাতে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির উত্তম নগর এলাকার মোহন গার্ডেন এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন দুই ভাই অঙ্কিত ও পরশ। তাদের সাথে সহযোগি হিসেবে ছিল তাদের ভাড়াটিয়া দেব চোপড়া।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানায়, গভীর রাতে রাস্তাঘাট ফাঁকা। মোহন গার্ডেন এলাকার বাসিন্দা দুই ভাই অঙ্কিত, পরশ ও তাদের ভাড়াটিয়া দেব গল্প করছিলেন। সঙ্গে ছিল অঙ্কিত-পরশদের পোষা কালো রঙের একটি ল্যাব্রাডার। সেই সময় বিজেন্দ্র রানা গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি আসতে দেখে ছুটে যায় সেই পোষা কুকুর। তাতে বিজেন্দ্রর গাড়ির সাথে কুকুরটির গায়ে সামান্য ধাক্কা লেগে যায়। কুকুরের চিৎকার শুনে ছুটে এসে আসেন মালিকরা। সেখানে এসেই তারা বিজেন্দ্রকে চুল ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে কুকুরের কাছে ক্ষমা চাইতে বলে।
তাতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে যান অঙ্কিত ও পরশ। মারধর থেকে বাঁচতে অঙ্কিত ও পরশের হাত ছাড়িয়ে বাড়ির দিকে দৌড়াতে শুরু করেন বিজেন্দ্র। কিন্তু তাকে ধরে ফেলে অঙ্কিতরা। বিজেন্দ্রকে ঘটনাস্থলে এনে ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকে দুই জন। চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসেন বিজেন্দ্রর বড় ভাই রাজেশ ও তার পরিবারের লোকজন। তাকেও তিনবার ছুরি মারা হয়। বিজেন্দ্রের পেটে স্কু ড্রাইভারও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আহত দুজনকে ঘটনাস্থলে ফেলে পালায় আততায়ীরা।
এলাকার বাসিন্দারা দুই জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিজেন্দ্রকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত অঙ্কিত ও পরশ পলাতক রয়েছে। সূত্র: টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন