শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপিতে আসছে তরুণ নেতৃত্ব

প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আইয়ুব আলী : ‘এক নেতা এক পদ’ নীতির কারণে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপিতে পরিবর্তন আসছে শিগ্গির। তরুণদের হাতেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ মহানগরীর দায়িত্ব আসছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। কমিটিতে স্থান পেতে চলছে জোর লবিং। নগর বিএনপিসাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় নগর বিএনপিতে পরিবর্তনের বিষয়টি এখন জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগে থেকেই গুঞ্জন রয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন। দলীয় সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটিতে আমীর খসরুর স্থান পাওয়াটা অনেকটা নিশ্চিত। ডা. শাহাদাত হোসেন সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর থেকে বিএনপির মহানগর কমিটিতে স্থান পেতে নগর বিএনপি নেতাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন একঝাঁক তরুণ নেতা।
এদিকে মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানকে সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা আবুল হাশেম বকরকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর কমিটি গঠনের কথা শোনা গেলেও বকরকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করায় এখন সাধারণ সম্পাদক পদে আরও নতুন মুখের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজিমুর রহমান, সাবেক ছাত্রদল নেতা আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক খোরশেদুল আলম, এস এম সাইফুল আলম। অপরদিকে কেন্দ্রীয় সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিনকে সভাপতি, নগর বিএনপি নেতা এডভোকেট আবদুস সাত্তারকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষিত হতে পারে বলে অপর একটি সূত্রে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নাজিমুর রহমান ইনকিলাবকে জানান, মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে শুনেছি। তবে কারা নতুন কমিটিতে স্থান পাবে তা দলীয় চেয়ারপার্সনের উপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, ভারসাম্য রক্ষা, ব্যক্তিগত ইমেজ এবং দল পরিচালনায় দক্ষতা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কমিটিতে স্থান দিলে দল অনেক শক্তিশালী হবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, শীঘ্রই মহানগর বিএনপির নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। গত সপ্তাহে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার ইঙ্গিত দেয়া হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুলাহ আল নোমান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সভাপতি পদে আগ্রহের ইঙ্গিত দিয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে আমি নগর কমিটির প্রত্যেক শাখা, ইউনিট গঠন করেছি। মাঠ লেবেলে তারা একটি জায়গায় কাজ করছে। আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখছে। সামনে আরো কঠিন সময় আসছে। এ অবস্থায় নতুন একজন সভাপতি হয়ে আসলে তিনি নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের এবং কয়েকশ’ ইউনিট কমিটির চাপ নিতে পারবেন না। নতুন সভাপতির মতো করে এসব কমিটি গঠন করতে গেলে মাঠ লেবেলে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোতে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু আমাদের এই কঠিন সময়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দল বা বিভেদ সৃষ্টির সুযোগ নেই। তাই পুরাতন কমিটি থেকে একজনকে সভাপতি করলে দলের স্বার্থ রক্ষা হবে।’ নীতির ক্ষেত্রে কিছু নমনীয় হয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণের দিক দিয়ে কয়েকটি জেলায় কেন্দ্রীয় পদের পাশাপাশি জেলার নেতৃত্ব দেয়ার পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জেলায় পুরাতন থেকে কেন্দ্রীয় পদের পাশাপাশি জেলার নেতৃত্ব অর্পণ করলে আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতার ভিত ঠিক থাকবে।
‘এক নেতার এক পদ’ নীতির কারণে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দলের স্থায়ী কমিটিতে চলে গেলে তার জায়গায় সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানকে সভাপতি করার কথা থাকলেও সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন সভাপতি হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করায় ওই নীতিতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। কারণ ইতোমধ্যে তিনি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসীন হয়েছেন। যদি চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে ওই নীতি অনুসরণ না করে ডা. শাহাদাতকে সভাপতি করা হয় সে ক্ষেত্রে আবু সুফিয়ান সম্পাদক হয় কি না তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। কারণ এখানে সিনিয়র জুনিয়রের প্রশ্ন এসে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি আবু সুফিয়ান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা আবুল হাসেম বকর এক প্রকার নিশ্চিতই ছিলেন বলে হাইকমান্ড সূত্র দাবি করেছে। কিন্তু আবুল হাশেম বকরকে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে পদায়ন করায় জটিলতায় পড়েছে নগর কমিটি গঠন প্রক্রিয়া। ‘এক নেতা এক পদ’ নীতির কারণে কোনো নেতাকে ক্ষেত্রবিশেষেও দুই পদে জায়গা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। যেসব নেতারা কেন্দ্রে স্থান পাবেন তাদের মহানগর কিংবা জেলার কোনো দায়িত্বে রাখতে চান না দলটির হাইকমান্ড। যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে এ ধুম্রজাল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন