বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

প্রথম মৃত্যু বাষির্কীতে সমাহিত করা হল খ্রিস্টান ধর্ম যাজক মারিন রিগনকে

মনিরুল ইসলাম দুলু | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ৫:৩৭ পিএম

প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আপন গ্রহে ফিরলেন খ্রিস্টান ধর্ম যাজক মারিন রিগন। রোববার সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে তার নিষ্প্রাণ দেহ বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে মংলা শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। এ সময় প্রিয় মানুষটিকে দেখতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। উপস্থিত ছিলে বাগেরহাট ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। হেলিকপ্টারে মারিন রিগনের মৃতদেহের সাথে আসেন বাংলাদেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের সাবেক সচিব নমিতা হালদার, ইতালিয়ন রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা, ফাদার রিগনের ছোট বোনের ছেলে মারিনো জুনিয়র ক্যাবেষ্ট্র। এরপর মোটর শোভাযাত্রা সহকারে মরদেহ উপজেলা প্রশাসনের মাঠে আনা হয়। পরে উন্মুক্ত মঞ্চে তার কফিন সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের জন্য রাখা হয়। গার্ড অব অনার প্রদানের পর সেন্ট পলস গির্জার (ক্যাথলিক চার্চ মিশন) পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সমাহিত করা হয় মারিনো রিগনকে।
মরলে বাংলার মাটিতেই মরব! জীবদ্দশায় বাংলাদেশের সন্মানসূচক নাগরিক ও মুক্তিযোদ্ধা ফাদার মারিনো রিগনের উক্তি এটি। ২০০১ সালে বাংলাদেশে তার হৃদযন্ত্রে অসুস্থতা ধরা পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইতালিতে যেতে স্বজনদের অনুরোধ উপেক্ষা করে এমন মন্তব্য করেছিলেন তিনি। অবশ্য স্বজনদের প্রবল আকুতি-মিনতির পর তখন রিগন ইতালিতে গিয়েছিলেন এই শর্তে- যদি তার মৃত্যু হয়, তাহলে অবশ্যই মরদেহটি বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। পরে চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশে ফিরলেও অসুস্থতার কারণে ২০১৪ সালে আবারও ফিরে যান ইতালিতে। সেখানেই ভিচেঞ্চা শহরে গত বছরের ২১ অক্টোবর ৯৩ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তবে প্রয়াতের শেষ ইচ্ছার কথা ভুলে যাননি তার স্বজন বা বাংলাদেশ সরকার।
মারিন রিগন ছিলেন একাধারে দার্শনিক, লেখক, অনুবাদক, মানবসেবক ও সমাজসেবক। মানবসেবা, সৃজনশীল কর্মকান্ড ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার তাকে বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিয়েছে। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন।
১৯২৫ সালে ৫ ফেব্রয়ারী ইতালির ভিচেঞ্জায় জন্মগ্রহন করেন এই ধর্ম যাজক মারিনো রিগান। মাত্র ২৮ বছর বয়সে খৃষ্ঠধর্ম প্রচারে ১৯৫৩ সালে ৭ জানুয়ারী পূর্ব পাকিস্থানে আসেন।মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাংঙ্গালিদের পাশে দাড়ান। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা,আশ্রয়,সেবা দেয়ার পাশাপাশি সরাসরি মুক্তি যুদ্ধে অংশনেন।
মারিন রিগন এর দীর্ঘদিনের সহচর এন্টনি ভাগ্য সরকার জানান, গীর্জার (সেন্ট পল্স ক্যাথলিক চার্চ) প্রবেশের প্রধান ফটকের বা’পাশে তার নিজ হাতে পরম যতেœ লাগিয়ে ছিলেন ‘সোনা ঝুড়ি’ ফুল গাছ। আর এ গাছের নিচে যাতে তাকে সমাহিত করা হয় জীবদ্দশায় সেই ইচ্ছা পোষণ করে ছিলেন বাংলাদেশের সন্মানসূচক নাগরিক ও মুক্তিযোদ্ধা মারিন রিগন । তিনি বলেন মারিন রিগন এর ইচ্ছা থাকার সর্তেও জায়গার সীমাবদ্ধ থাকায় এ গাছের নিচে তাকে সমাহিত করা হয়নি। এখান থেকে খানিকটা দূরে সাধু পলের মূর্তির নিকটে রোববার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় তাকে সমাহিত করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন