শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

একনেকে ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি টাকার ২৮ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৮, ৭:৩২ পিএম

নেত্রকোনায় স্থাপন করা হচ্ছে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার (৭ নভেম্বর) একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পটির নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বর সময়ে এটি বাস্তবায়িত হবে। এছাড়া জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি টাকার ২৮ টি প্রকল্প পাস হয়েছে।একনেক চেয়ারপারসন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদেরকে ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

একই সঙ্গে জয়িতা ফাউন্ডশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ নামের একটি প্রকল্প পাস করা হয়েছে। বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ২৮ হাজারের অধিক নারীকে সম্পৃক্ত করে নারী উদ্যোক্তাদের বহুবিধ ব্যবসা উদ্যোগের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জয়িতা ফাউন্ডেশন।

এছাড়া সংশোধন করা হচ্ছে শহীদ কামরুজ্জামান টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, মান্দা নামের প্রকল্পটি। এক্ষেত্রে মূল ব্যয় ৭৪ কোটি ৬২ লাখ থেকে ৮২ কোটি ১৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১৫৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মেয়াদও বাড়ছে এক বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধন করা হচ্ছে ভোলা টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট প্রকল্পটি। প্রথম সংশোধিত ব্যয় ৭২ কোটি ৯২ লাখ থেকে ৩২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে এখন মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। মেয়াদ বাড়ছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর।

পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, গত রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দিয়েছে ৩৯টি উন্নয়ন প্রকল্প। দু’দিন পরই আজ একনেকে অনুমোদিত হয়েছে আরও ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প। তাইবলে এটাকে নির্বাচনী একনেক বলা যাবে না। কেননা অর্থবছরের এই সময়টাতে এমনিতেই প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ একটু বেশি হয়ে থাকে। এ সময়টাকে বলা যায় প্রকল্পের মৌসুম। তবে অন্যান্য বছর যে সংখ্যক প্রকল্প প্রস্তুত হয়, তার চেয়ে এ বছর একটু বেশি স্পিডে প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে। সবাই বেশি করে কষ্ট করছেন। কারণ যদি নির্বাচনের সময়টাতে একনেক না হয় তাহলে এগুলো আবার পিছিয়ে যাবে। আমরা কোন তাড়াগুড়ো করে প্রকল্প পাশ করছিনা, পুংখানুঙ্খভাবে দেখে দেখে প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ করছি। সুতরাং গুণগত মান না থাকার কোনো মানে নেই। গত রোববার একনেকে ৪০টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হলেও একটি অনুমোদন দেয়া হয়নি। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায় প্রকল্পগুলো কতটা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

একনেকে অনুমোদন হওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে কঠিন বর্র্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা, বহাদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন, চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ (ষষ্ঠ পর্ব), বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ, ১১টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্থাপন, মাদারীপুরে সরকারি অফিসগুলোর জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ, নির্বাচিত ৯টি সরকারি কলেজের উন্নয়ন, গোপালগঞ্জের শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢাকা সূত্রাপুরের শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, চট্টগ্রাম-খুলনা-রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, র‌্যাব ফোর্সের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন, সোনাগাজী ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, বীজ প্রত্যয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ বিশেষ ধরণের পন্টুন নির্মাণ ও স্থাপন, বৃহত্তর রাজশাহী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বৃহত্তর নোয়াখালী (নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা) পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন, বাঙ্গালী-করতোয়া-ফুলজোর-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং/পুনঃখনন ও তীর সংরক্ষণ, বৃহত্তর নোয়াখালী (নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা) পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, বৃহত্তর রাজশাহী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ) এবং ইমারজেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপনস প্রকল্প।

একনেকে উপস্থাপিত ২৮টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারিভাবে ২৪ হাজার ৮৫৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৫৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ৫০৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন