নাটোর জেলা সংবাদদাতা : ১ মে (রোববার) বরেণ্য কথা সাহিত্যিক শফীউদ্দীন সরদার ৮২ বছরে পদার্পণ করলেন। ১৯৩৫ সালের এই দিনে তিনি নাটোর সদর উপজেলার হাটবিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শফীউদ্দীন সরদার ১৯৫০ সালে মেট্রিকুলেশন পাশ করার পর রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ, বিএ অনার্স এবং এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। পরে তিনি লন্ডন থেকে লাভ করেন ডিপ্লোমা-ইন-এডুকেশন ডিগ্রী। নিজ গ্রামের স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে তিনি এক এক করে রাজশাহী সরকাফর কলেজ ও রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে অধ্যাপনা এবং বানেশ্বর কলেজ ও নাটোর রাণী ভবাণী মহিলা কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।
গত ১৯৮২ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রচিত প্রথম সামাজিক উপন্যাস চলন বিলের পদাবলি দেশের কোন প্রকাশনা সংস্থা প্রকাশ না করায় তিনি আজীবন ঐতিহাসিক ও সামাজিক উপন্যাস রচনার সিন্ধান্ত নেন। শফীউদ্দীন সরদারের লেখক জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন হলো তাঁর ঐতিহাসিক উপন্যাস।
বাংলাদেশের মুসলামানদের সাড়ে সাতশো বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তিনি ধারাবাহিকভাবে উপন্যাসের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন অত্যন্ত সফলভাবে। ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজীর বঙ্গ বিজয় থেকে ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান আন্দোলনসহ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও তার পরবর্তী সময়ের ইতিহাস তিনি উপস্থাপন করেছেন ১৭টি পৃথক উপন্যাসের মাধ্যমে। এসব উপন্যাস হলো-বখতিয়ারের তলোয়ার, গৌড় থেকে সোনারগাঁ, যায় বেলা অবেলায়, বিদ্রোহী জাতক, বার পাইকার দুর্গ, রাজ বিহঙ্গ, শেষ প্রহরী, প্রেম ও পূর্ণিমা, সূর্যাস্ত, বিপন্ন প্রহর, পথহারাপাখী, বৈরী বসতি, অন্তরে প্রান্তরে, দাবানল, ঠিকানা, ঝড়মুখী ঘর, এবং অবৈধ অরণ্য।
শফীউদ্দীন সরদার নিজে তার জন্মদিন পালন করতেই চান না তবে তার ভক্তরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে বাড়িতে গেলে তিনি আবেগে আপ্লুুত হয়ে যান। কবি আল্ মাহ্মুদের ভাষায় ‘শফীউদ্দীন সরদার বাংলাদেশের সমকালীন সাহিত্যে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। যিনি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী মুসলিম বীরত্বগাঁথার মহান উপস্থাপক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন