ভিসি ও ভিসি বিরোধী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। যৌন নির্যাতন, বেতন বৈষম্য, শিক্ষকদের মারধোর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন আজ রবিবার (২৫ নভেম্বর) ৭ দিনের মত অব্যাহত রয়েছে। দেড় শতাধিক শিক্ষকের সাথে আন্দোলনে যোগ দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের মারধোর ও লাঞ্ছিতের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাইছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও, যদিও তাদের সেশনজটের পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দ্রুত বিষয়টি সমাধান চেয়েছেন প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম, আর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উল্লেখ্য যে, বর্তমান ভিসি ড. আবুল কাশেম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরপরই তার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদ আত্মপ্রকাশ করে। পাশাপাশি সাবেক ভিসি অধ্যাপক রুহুল আমিন এর নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম ভিন্ন ব্যানারে কর্মসূচী অব্যাহত রাখে। একটি সূত্র মতে মূলত শিক্ষকদের দুটি সংগঠনের পিছনে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের বিভক্ত সংসদ সদস্যদের সমর্থন।
গত ১১ অক্টোবর রিজেন্ট বোর্ডের সভায় দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১ জন শিক্ষককে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। কিন্তু পদ অনুযায়ী বর্ধিত বেতন দেয়া হচ্ছিল না তাদেরকে। বিষয়টি জানতে গত বুধবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হাওলাদারের কাছে যায় ওই ৬১ শিক্ষক। সেখানে কথা চলাকালীন সময়ে সিনিয়র শিক্ষকদের ইঙ্গিতে তাদের উপর হামলা চালায় কতিপয় ছাত্র। শুধু তাই নয়, সেখানে অবস্থানরত নারী শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানিও করা হয়। তাই, ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছে দেড় শতাধিক শিক্ষক। দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত অব্যাহত আন্দোলনের ঘোষণা তাদের।
শিক্ষকদের উপর মারধোর ও লাঞ্ছিতের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারাও চাইছে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার। যদিও ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় সেশনজটের মধ্যে পড়ার আশঙ্কা তাদের।
এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকরাও। তারা বলছেন, ছাত্র কর্তৃক শিক্ষকদের মারধোর কলঙ্কজনক অধ্যায়। প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার না হওয়া, আলোচনার ব্যবস্থা না করা এবং প্রশাসন কাউকে পাত্তা না দেয়ায় এসব ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হচ্ছে না।
বেতনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেজিস্টার। শিক্ষকদের উপর হামলার ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে শিক্ষকদের সহানুভূতিশীল হওয়ার পরামর্শ তার।
প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক রয়েছেন ২৯৩ জন। যাদের মধ্যে ৫০ জন ছুটিতে রয়েছেন। বাকী ২৫০ জন শিক্ষকের মধ্যে দেড় শতাধিক শিক্ষক ক্লাস গ্রহণ থেকে বিরত রয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন