শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সরকার মিডিয়ার স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ

প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সরকার মিডিয়ার স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। ভোটারবিহীন সরকার গণতন্ত্রের কথা বলে মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। দেশের মানুষ আজ সীমাহীন দুর্ভোগে দিন জীবন-যাপন করছে। ন্যায়ের পক্ষে কথা বলায় আজ সাংবাদিকরা মামলা-হামলার শিকার হচ্ছেন। তারা বলেন, আজ আমরা যখন বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি তখন সাংবাদিক শফিক রেহমান ও শওকত মাহমুদ কারাগারে, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিমান্ডে। অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক সাগর-রুনিসহ ২৫ জন সাংবাদিক হত্যার কোনো বিচার হচ্ছে না। অনেক সাংবাদিক আজ বেকার।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থিত ইউনিয়ন কার্যালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে একাংশ আয়োজিত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে এবং ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন হাসনাতের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহŸায়ক রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের মহাসচিব এম. আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজীজ, বিএফইউজের সহ সভাপতি মুন্সি আব্দুল মান্নান, ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, সহ-সভাপতি নাসিম শিকদার, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক নেতা নুরুল আমীন রুকন, আবু ইউসুফ, রফিক মোহাম্মদ, কামার ফরিদ, বাছীর জামাল, জাকির হোসেন, গোলাম আজাদ, সাখাওয়াত ইবনে মইন চৌধুরী, শেখ রকিব উদ্দিন, ডি.এম. আমিরুল ইসলাম অমর, মো. বোরহান উদ্দিন প্রমুখ। আলোচনা সভায় সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবীব।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, আজ গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। সরকার সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে আটকে রেখেছে। এছাড়া কোনো অভিযোগ ছাড়াই সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানকে কারাগারে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। অবিলম্বে তাদের মুক্তির জন্য আমি সরকারের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি। এছাড়া বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের আমলে ২৭ জন সাংবাদিক খুন হয়েছে, এখন পর্যন্ত একটা খুনেরও বিচার হয়নি। আমি সকল সাংবাদিক হত্যার বিচারও দাবি করছি।
বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অকল্পনীয় হুমকির মুখে পড়েছে সাংবাদিকদের জীবন ও জীবিকা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দল, মত, পথ নির্বিশেষে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরো বলেন, মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪তম বলে গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন। আমরা মনে করি বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থান আরও তলানীতে। এরই মধ্যে সরকার জাতীয় সম্প্রচার আইন প্রস্তাব করেছে যাতে ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়াকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও দীর্ঘমেয়াদে জেলের বিধান রাখা হয়েছে। সর্বশেষ প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধন প্রস্তাবে জেল-জরিমানার পাশাপাশি এক মাস পর্যন্ত সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়ার কালাকানুন প্রস্তাব করেছে আইন কমিশন। এসবই বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে আরও কার্যকরভাবে সরকারের পদানত করার জন্য করা হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।
কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, বর্তমানে সাংবাদিকরা গার্মেন্টস শ্রমিকদের চেয়েও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। বর্তমান আওয়ামী মহাজোট সরকারের আমলে সাগর-রুনীসহ ২৭ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, আহত হয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী। দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত, ইসলামিক, চ্যানেল ওয়ান, সিএসবিসহ সারাদেশে ভিন্ন মতের ২ শতাধিক সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অনলাইন গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য কঠোর নীতিমালা জারি করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম প্রধান বলেন, সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব আজ হুমকির মুখে। আমরা আজ সঠিক তথ্য তুলে ধরতে পারছি না। আমাদের কণ্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে।
৯ম ওয়েজবোর্ড ঘোষণার দাবি
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে ৯ম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা এখন সময়ের দাবি। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পে-স্কেল ঘোষণার পরে গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন-ভাতা এখন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) স¤প্রসারিত মিলনায়তনে গতকাল সকালে ইয়ুথ জার্নালিস্টস্ ফোরাম বাংলাদেশ (ওয়াইজেএফবি) আয়োজিত ‘তথ্যের অবাধ স্বাধীনতা ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন