স্বপ্নের দেশ সউদী আরবের সেইফ হোমে মামলার বেড়াজালে পড়ে বাংলাদেশী প্রবাসী নারী কর্মীরা দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। দায়েরকৃত মামলা দ্রুত নিস্পত্তি না হওয়ায় মাসের পর মাস বছরের পর বছর রিয়াদ সেইফ হোমে আবদ্ধ জীবন যাপন করতে গিয়ে প্রবাসী নারী কর্মীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নানাভাবে নির্যাতনের শিকার সেইফ হোমটিতে বর্তমানে প্রায় ১শ ৪০ জন প্রবাসী নারী কর্মী দেশে ফেরার প্রহর গুনছে। রিয়াদ থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
রিয়াদ সেইফ হোম থেকে ভুক্তভোগি একাধিক প্রবাসী নারী কর্মী বলেছেন, সেইফ হোমটির ১শ’ ৪০ জনের মধ্যে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন নারী কর্মী আট মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত কর্মস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত মামলার বেড়াজালে পড়ে দেশে ফিরতে পারছে না। এদের সন্তানরা দেশের বাড়ীতে কান্না-কাটি করে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে।
রিয়াদ সেইফ হোম থেকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের প্রবাসী নারী হিমু আক্তার, সুনামগঞ্জের নূর জাহান, ও সিলেটের সাবিনা আক্তার সউদী কফিলদের নানা দুর্ব্যবহারের কথা তুলে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা বলেন, রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আইন সহায়তার তৎপরতা জোরদার করলে প্রবাসী নারী কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তি হওয়া সম্ভব। তারা প্রবাসী নারী কর্মীদের মামলা দ্রুত নিস্পত্তির জন্য সরকারর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
২০১৬ সালের ২৪ জুলাই সেইফ হোমে আশ্রয় নেয়া প্রবাসী হিমু আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে একটি সন্তান রেখে গিয়েছি শুধু কাজ করে দু’টো পয়সা আয়-রোজগার করার জন্য। কিন্ত সউদী কফিল মাত্র এক মাসের বেতন ৮শ’ রিয়াল দিয়েছে। বেতন চাইলে মারধোর করার অভিযোগ তুলে হিমু আক্তার। হিমু আক্তার বলেন, ওরা (কফিল) খাদ্দামাগো খাওন দেখতে পারে না। প্রবাসী সাবিনা বলেন, আমার কফিল দুই মাসের বেতন দেয়নি। ঠিক মতো খাবার দেয়নি এবং কফিল মারধোর করায় সে পালিয়ে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিষ্ঠিত সেইফ হোমে গিয়ে আশ্রয় নেই।
সাভারের প্রবাসী মিনু বেগম দালালদের খপ্পরে পড়ে ভিজিট ভিসায় দুবাই যায়। সেখান থেকে সউদী কফিল তাকে সউদী আরবে নিয়ে কাজ দেয়। ঠিক মতো বেতন-ভাতা না দেয়ায় মিনু পালিয়ে সেইফ হোমে আশ্রয় নেয়। বর্তমানের ৬ মাস যাবত সেইফ হোমে নানা মামলার নিস্পত্তি না হওয়ায় সে দেশে ফিরতে পারছে না। সেইফ হোমে আশ্রয় নেয়া নাটোরের প্রবাসী নুপুরেরও একই অবস্থা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন