প্রার্থী মনোনয়নে দলের স্বার্থ বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে মহাজোট ! এমনটি মনে করেন দলের তৃণমুল। সেই ব্যর্থতার আঁচড় বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে দেখতে চায় না নিপীড়িত, অসহায় মজলুম কর্মী-সমর্থক। দল ও বিজয়ের স্বার্থে প্রার্থী মনোনয়নে অগ্রাধিকার দিবে নীতিনির্ধারক এমন দাবী তাদের। দীর্ঘ যন্ত্রনার পর রাজনীতি ও নির্বাচনের সুবাতাস এখন দেশের মাঠিতে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থেকে-ই নিচ্ছে নির্বাচনের প্রস্ততি, কিন্তু সেই আগের মতোই আছে বিএনপি। শুধূু বাড়তি পাওয়া নির্বাচনের একটি আমেজ। এই আমেজের মধ্যে দিয়ে স্বস্তি চায় তারা। দলের নীতি নির্ধারক তৃণমুলের অনুভবের সাথে একাকার না হলে, পাকা ধানে মই নিজেই দিবে দল। দলের নিকট থেকে কোন কষ্ট ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তুত নয় তৃণমুল। চমকের মধ্যে দিয়ে নির্বাচনী যুদ্ধে অংশ নিতে চায় তারা। শাসক দলের প্রার্থী মনোনয়নের পর চাপা অসন্তোষ এখন সর্বত্র। দমাতে নানামুখী চাপ থাকলে, ভবিষ্যত এখনও অনিশ্চিত। কারন প্রার্থীদের ব্যক্তিগত এমপি পদে দীর্ঘ অবস্থানে তৃণমুলে রোগ-ব্যাধি চরমে। কোমায় গিয়ে ঠেকেছে বেশিরভাগ এমপি প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা । সাধারন মানুষের কথা বাদ দিয়ে, দলের তৃণমুলে তারা অসহ্যকর এক চরিত্র। নৌকার জন্য তাদের বুক ভরা ভালোবাসা থাকার পরও, প্রার্থীদের জ্বালানো আগুনে তারা ছিলেন অসহায়। বুকের আগুন বুকে নিয়ে অপেক্ষা করেছিলেন, এসব প্রার্থীদের মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে যাবে তাদের। কিন্তু দল, ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে, আবার নির্বাচনী যুদ্ধে ছেড়ে দিয়েছে সেই সব প্রার্থীদের। প্রার্থীরা আড়ালে-আবডালে টিপ্পনি কাটছেন, দলের মধ্যে বিরোধীতাকারীদের। সেকারনে মন জ্বালা এখন তীব্র তৃণমুলে মহাজোটের ভোটারদের। আসন্ন নির্বাচনে বিরোধী দল শুধু নয়, খোদ দলের ভোটাররাও প্রার্থীদের দেখিয়ে দেওয়ার গোপন প্রতিশোধের অপেক্ষায় রয়েছেন। মুলত মহাজোটের প্রার্থীরা খোদ দলের মধ্যে সময়ের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। এদৃশ্য অবলোকন করছে, বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের ভোটাররা। সেকারনে তারা অধিকতর, গ্রহনযোগ্য, শক্তিমান প্রার্থীকে ভোট যুদ্ধে প্রত্যাশা করছে। একাধিক প্রার্থীর মধ্যে ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার খায়েশ জন্মে গেছে। কিন্তু মাঠের বাস্তবিক অবস্থা পর্যালোচনায় তারা কতটুকু মনোনযোগি তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। অনেক আসনে রয়েছেন সরকারের জাঁদরেল মন্ত্রী, এমপিও। তারা দীর্ঘ সময়ে নিজেই নিজেই বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছেন। ক্ষমতার ছায়া-তাপ তাদের উপর। অপরদিকে তাদের সাথে ভোট যুদ্ধে লড়তে একান্ত ধানের শীষ নির্ভর প্রার্থী হলে, মাঠে-ঘাটে পরিণাম ভয়াবহ হয়ে যাবে। নির্বাচনের আগেই কোনঠাসা হয়ে যাবেন বিএনপির প্রার্থীরা। কর্মী-সমর্থকরাও ভোটের আগেই মনোবলহীন হয়ে পড়বে, পাকা ধান ঘরে তুলতে দক্ষ প্রার্থীর অভাবে। নির্বাচনী মাঠ নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশিদের অনেকে ছেলে খেলা মনে যেন করেছেন, এমনটি লক্ষ করছেন দলের নেতাকর্মীরা। সিলেটের ৬টি আসনে মহাজোটের প্রার্থীরা, তৃণমুলের বিবেচনায় অপাংক্তেয় হলেও বাহ্যিক অবস্থানে তারা শক্তিমান। কারন ক্ষমতার রূপ রসে বলিয়ান এই সব প্রার্থরা। তাদের মতো করে সাজানো পারিপার্শ্বিক পরিবেশ গঠন করে রেখেছেনও তারা। সেকারনে অনেকটা রিলাক্সমুডে এ সব প্রার্থীরা। মহাজোটের সাজানো ছকের বিপরীতে, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা অনেকে পেছেন মাঠে-ঘাটে। চরম চাপের মধ্যে অতিক্রম করতে হবে নির্বাচনের আগে-পরে এসব প্রার্থীদের। সেই প্রস্তুতি কতটুকু রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশি প্রার্থীদের। এসব বিবেচনায় নিয়ে তুলনামুলক শক্তিমান প্রার্থী ঘোষনা না করলে ভোট যুদ্ধের আগেই মাঠ যুদ্ধে দৃশ্যমান পরাজয় ঘটবে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন