পাবনা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলো কিলোমিটার দূরে দোগাছি ইউনিয়নের চরকোমরপুর গ্রামে পদ্মা কোলে কুমিরের দেখা পেয়ে মানুষের মধ্যে আতংক দেয়। প্রায় ৬ফুট দৈর্ঘ্যরে কুমিরটি খাদ্য সংকটে হিংস্্র হয়ে ওঠায় বিপাকে পড়েন গ্রামের কৃষি ও মৎসজীবীরা। এই খবর দৈনিক ইনকিলাব-এর অন লাইনসহ দেশের জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদ ও টিভি মিডিয়ায় প্রচারিত হলে বিবিসি বাংলার ও পাবনা ডেইলে স্টারের পাবানস্থ রিপোর্টার আহমেদ হুমায়ূন বিবিসি বাংলাকে পাঠালে পাবনার কুমিরের খবর গুরুত্বের সাথে বিবিসি বাংলা নিউজে প্রচার করা হয়। বিবিসি বাংলায় প্রচারিত খবরটি হবহু তুলে ধরা হল : বাংলাদেশের পাবনায় পদ্মা নদীর একটি শাখায় একটি মিঠা পানির কুমির পাওয়া গেছে। তবে কুমিরটি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নদী তীরবর্তী স্থানীয় বাসিন্দারা । কমিরিটি ভারত থেকে ভেসে এসেছে বলে ধারণা করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা । কারণ প্রায় ৬০ বছর আগে এ ধরণের কুমির বাংলা দেশের নদী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পাবনা সদর থেকে ১২ কিলো মটিার দূরে পদ্মা নদী শুকিয়ে যাওয়ার পরে চরের মাঝে তৈরী হওয়া একটি হ্রদের মতো স্থানে আটকে রয়েছে কুমিরটি। স্থানীয় সাংবাদিক আহমেদ হমায়ূন বিবিসি নিউজ বাংলাকে জানান, প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে স্থানীয় একজন বাসিন্দা মাছ ধরতে গিয়ে প্রথম কুমিরটি দেখতে পান।এরপর থেকেই ভয়ে কেউ আর ঐ খালে মাছ ধরতে যাচ্ছেন না। সংবাদদাতারা বলছেন , চর কোমরপুর নামের ওই জায়গাটি পদ্মা নদীর একটি অংশ। কিছুদিন আগে বর্ষার সময়ও সেখানে অনেক পানি ছিল। কিন্তু সম্প্রতি চর জেগে ওঠার পর দুই পাশে চর পড়ে মাঝখানে একটি গভীর হ্রদের মত সেইখানেই রেয়েছে কুমিরটি । ঐ এলাকার একজন বাসিন্দা জামাল হোসেন , স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কয়েক দিন আগে পদ্মা নদীর চরে বলশি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে হঠাৎ কুমিরটির মাথা তুলতে দেখি এরপর আমি এসে সবইকে খবর দেই।’
তিনি বলছেন, এরপর থেকে সেখানে ভয়ে আর কেউ মাছ ধরতে যায় না এবং নদী পাড়ে গরু ছাগল চরাতেও যায় না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত ৩৫/৪০ বছরের মধ্যে এই এলাকায় প্রথম কুমির দেখা গেল। কুমিরটির খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো: জাহিদুল কবির বিবিসি নিউজ বাংলাকে বলেছেন, ‘ কুমিরটি যেখানে আছে , সেটি তার জন্য নিরাপদ কারণ ওখানে গভীর পানি আছে আর মাছ রয়েছে। ওটা ঘনবসতি এলাকা না। যদি এলাকার লোকজন সহায়তা করে তাহলে এটি ওখানেই থাকে পারে।এটিকে উদ্ধার করে খাঁচায় বন্দী করার প্রয়োজন পড়বে না।’ তারা যদি সহায়তা না করে বা তারা যদি রাখতে না চায় , তাহলে কুমিরটি আমার নিয়ে আসবো। বন্য বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন, এটি একটি মিঠা পানির কুমির । বর্ষার সময় পদ্মা নদীতে ভেসে ভারত থেকে এটি এসে থাকতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। ’
ইনকিলাব-এর প্রতিবেদন : বিবিসি বাংলা নিউজকে অবশ্য প্রাণী সংরক্ষণ দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা এটা কোন প্রজাতির কুমির যা বাংলাদেশের নদী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে, সেটি বলেননি।’ এ ব্যাপারে আজ শুক্রবার ডেইলী স্টারের পাবনাস্থ সাংবাদিক আহমেদ হমায়ূন তপুর সাথে ইনকিলাবের এই স্টাফ রিপোর্টার যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘নিশ্চিত করে জানা যায়নি এটি কোন প্রজাতির কুমির। শুধু জানা গেছে, মিঠা পানির কুমির , এ দেশের নদ-নদী থেকে বহু বছর আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।’
অপরদিকে, এলাকা ঘন বসতি নয় বলে যেটি বলা হচ্ছে সেটি একেবারে সঠিক নয়। এর আশপাশে মানুষজন বাস করেন। নদীতে জেলেরা মাছ ধরেন, মানুষজন গোসল করেন, বাসনপত্র মাজতে গ্রামের মহিলারা পদ্মা কোলের এই স্থানে আসেন । কুমির নিয়ে গ্রামবাসী বাস করতে চান না। গ্রামবাসী বলছেন, কুমির আর বাঘ নিয়ে বাস করা যায় না। গ্রামের যুবকরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে, বন্যপ্রাণী বিভাগের লোকজন এই কুমিরকে নিয়ে না গেলে সুযোগ পেলে তারা পিটিয়ে কুমিরটিকে মেরে ফেলবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন